ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। পড়শি দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কথা বারবার জানিয়েছে ভারত। এছাড়াও আন্তজার্তিক মহলে প্রবলভাবে সমালোচিত হচ্ছে পড়শি দেশের সরকারের ভূমিকা নিয়ে। এরমধ্যেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করল মিতালী এক্সপ্রেস। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। পাঁচ মাস বাংলাদেশে আঠকে থাকার পর ভারতে ঢুকল মিতালী এক্সপ্রেস।
প্রসঙ্গত, ১৭ই জুলাই শেষবারের মতো জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন পার হয়ে হলদিবাড়ি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে লালমণিহাট হয়ে ঢাকাতে প্রবেশ করেছিল। ঠিক সেই সময়ের আগে থেকেই বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হয়। আরও ভয়বহ রূপ নিতে থাকে সেই সময়। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। তখনই আটকে পরে মিতালী এক্সপ্রেস। অযত্নে ওপার বাংলাতেই থাকে ট্রেনটি। শেষমেশ ঢাকায় দুই দেশের বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পরই মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ থেকে ভারতের হলদিবাড়ি স্টেশনে ফিরিয়ে আনা হয় মিতালী এক্সপ্রেসটিকে।
বাংলাদেশে পরিস্থিতি অস্থির হওয়ার পর বেনজিরভাবে বন্ধ ছিল ভারত-বাংলাদেশ ট্রেন চলাচল। ফারাকের সময়টা ১৯শে জুলাই থেকে ৯ ডিসেম্বর। এমনকি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাস পরিষেবা কিছুদিন বন্ধ থাকে। কিন্তু তরপরও এই পরিষেবা কিছুটা সচল হয়। এমনকি কলকাতা বা দিল্লির সঙ্গে আকাশপথে ঢাকা বিমানবন্দরের যোগাযোগের পরিষেবাও স্বাভাবিক হয়। এছাড়াও পুজোর আগে ইলিশ নিয়ে যে টালমাটাল পরিস্থিতি চলছিল, সেখানে দঁড়িয়ে বাংলাদেশ সরকার ইলিশ পাঠিয়েছিল ভারতে। কিন্তু দু দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ পরিষেবা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে ১৯শে জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যায় কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী পরিষেবা। ২০শে জুলাই থেকে বন্ধ কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস। এর ফলে অসুবিধায় পড়তে হয় বহু যাত্রীকে। দুই দেশেই বেশি নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষের বসবাস। বেশিরভাগ মানুষই ট্রেনে যাতায়াত করেন। পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় প্রবল সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। এদিকে বাসযাত্রা রোগীদের ক্ষেত্রে কষ্টকর। ২১শে নভেম্বর এই বিষয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। যাতে জানা গিয়েছিল রেক ফিরলেই চলবে ট্রেন।
উল্লেখ্য, প্রত্যেকদিন বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ কলকাতায় আসেন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে। মেডিক্যাল ট্যুরিজম তৈরি হয়ে উঠেছিল ইস্টার্ন বাইপাস-লাগোয়া একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল জুড়ে। কিন্তু বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতেই এপারে আসা বন্ধ করে দেয় বহু বাংলাদেশী নাগরিক। এরফলে চরম আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় তাদের। পাশাপাশি গুরত্বপূর্ণ বিষয়, কলকাতা টার্মিনালে ইমিগ্রেশন কাউন্টার স্ট্যানার-সহ সমস্ত পরিকাঠামো পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এদিকে, বন্ধন এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস খাতে ট্রেন পিছু কিছু ভারতীয় মুদ্রায়. প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা টিকিটের দাম প্রতিদিন ফেরত দিচ্ছে রেল। আর এি প্রেক্ষাপতে মিতালী এক্সপ্রেস বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করল। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Discussion about this post