বাংলাদেশে নাকি ঘোষিত হতে চলেছে জুলাই সনদ। জুলাই সনদ ঘোষণা হওয়ার পর কি বড়সড় কোনও পরিবর্তন আসবে বাংলাদেশে? সংবিধান কি বদল হয়ে যাবে? শাসন পরিকাঠামোও কি বদলে যাবে? নাকি ২০২৪ সালে জুলাই অগাস্টের গণ অভ্যুত্থানে যারা লড়াই করেছিল, তাদের আন্দোলন, লড়াইয়ের কথা তুলে ধরা হবে? এই বিষয়ে কি বলছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা? তবে বিএনপি এবং সেনাবাহিনীকে আস্থায় আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কেন? চলুন আলোচনা করা যাক। আর পাশাপাশি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারের বদলা নেবে ইউনূস। এটাও বলছেন কেউ কেউ।
জুলাই সনদ নাকি এই বছরের জুলাই মাসে ঘোষণা করা হতে পারে। এই বিষয়ে বিএনপির অবস্থান ঠিক কি হবে? অনেকে বলছেন, এই জুলাই সনদে সই করলেও হয়তো তারা পরিস্থিতি বিবেচনা করবে। এমনকি তাদের ঐক্যমত তৈরি হলে তবেই তারা সাক্ষর করবেন। অনেকে বলছেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির যে বৈঠক হল, তাতে জুলাই সনদ নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, সেটা বলাই বাহুল্য।
তবে আদতে এই জুলাই সনদ কি? এটার মাধ্যমে কি নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করা হবে? কারণ সেটাই বলা হচ্ছে। আসলে নতুন বাংলাদেশ বলতে কী বোঝাতে চাইছে? ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বাংলাদেশ করা হয়েছিল সেটাকে কি মুছে ফেলা হবে?
এদিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্ন মতামতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। এমনকি ছাত্রনেতাদের নিজেদের মধ্যে কিছু বৈষম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি বিএনপি’র মতের বিরুদ্ধে যায়, তবে তারা এই জুলাই সনদকে সমর্থন করবে না। তবে ইসলামপন্থী দল গুলোর দাবি, যে করেই হোক, জুলাই সনদ ঘোষণা করতেই হবে। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশের কোনও দল যাতে ফ্যাসিস্ট না হয়, সেটাই চাইছে তারা। অর্থাৎ তারা বলতে চাইছে, শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট দিল ছিল। ফলে একনায়কতন্ত্র চালাতে না পারে, এমন কোনও দল যেন না উঠে আসে। তেমনভাবেই যেন জুলাই সনদ ঘোষণা করা হয়।
ইতিহাস বলছে, এরকম জুলাই সনদ ৯০ দশকে একবার দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশে। সেখানে আওয়ামীলীগ-বিএনপি এবং বাম দলের জোট স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু তখন সেই ঘোষিত সনদ সেইভাবে কোনও কার্যকর হয়নি। ফলে এবারের জুলাই সনদ আদেও পূরণ হবে কিনা, সেটা প্রশ্নাতীত। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আর পাশাপাশি জুলাই সনদের সাফল্য অনেকটাই বিএনপি’র উপর নির্ভরশীল। আর কারণ, পরবর্তী সংসদ নির্বাচিত হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। সেটা এক প্রকার নিশ্চিত। ফলে সংসদে পাস করাতে গেলে বিএনপিকে অস্থায়ী নেওয়াটা জরুরি। যদিও ছাত্র নেতারা বলছেন, গণভোটের মাধ্যমে বা অন্যভাবে যেন জুলাই সনদ পাশ করানো যায়। অর্থাৎ সংসদে পাশ করানোর বিষয়টিতে তারা এড়িয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সব থেকে দেখার বিষয় হল, বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় কোনও পরিবর্তন আসে কিনা! এবং এর মধ্যে সেনাবাহিনীর মতামত গ্রহণ করা হচ্ছে কিনা সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফলে জুলাই সনদ ঘোষণার পর কি হতে চলেছে, এখন সেই প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। বাংলাদেশ কি বর্তমান পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াবে? নাকি জুলাই অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা যোগদান করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনও সরকার যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারে, সেই কারণেই এই জুলাই সনদ ঘোষণা? যদিও তার খসড়া সামনে এলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে সেই খসরা সরকার সামনে আনবে কিনা সেটাও প্রশ্নাতীত।
Discussion about this post