একটা হত্যা। আর সেই হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিতে একের পর এক মিথ্যে বিবৃতি।
একটি দেশ কতটা নির্লজ্জ হতে পারে, কতটা আত্মসম্মানবোধহীন হতে পারে, একটা দেশের সরকার কতটা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ বাংলাদেশে। তারা বুঝতে পারছে না, আন্তর্জাতিকমহল তাদের কী চোখে দেখছে। অপরাধ তারা স্বীকার করে নিলেই পারত। জানিয়ে দিতে পারত, এই ধরনের ঘটনা যাতে আগামীদিনে না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ করা হবে। সেটা না করে উলটে এমন সব বয়ান দিয়েছে, যা তাদের আরও বেআব্রু করে দিয়েছে। মিডিয়াতে ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে। সব কিছুই নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর উলঙ্গ রাজা কবিতা স্মরণ করায়। তদারকি সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা তথা তৌহিদ হোসেন তো বেশ গর্বের সঙ্গে জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও হয়ে থাকে।
কী অদ্ভূত যুক্তি, তাই না! তার মানে তো তিনি ঘুরিয়ে ঘটনাকে সমর্থন করছেন। তৌহিদের ওই মন্তব্য সে দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এ এম এম নাসিরুদ্দিনের মন্তব্যকে স্মরণ করায়। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন এলে এই ধরনের খুন-খারাবি হয়ে থাকে। তার মানে এই নয় যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তিনিও খুনকে সমর্থন করছেন। বলতে চাইছেন, এই ধরনের ঘটনা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
কী হয়েছে পদ্মাপারে? মৌলবাদীদের রোষের বলি হয়েছেন দীপু দাস। তাঁকে প্রথমে একটা গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তার আবার তারা ভিডিও করা হয়েছে। সেই নৃশংস ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কে বা কারা ভাইরাল করে দিয়েছে। যদিও নিউজ বর্তমান সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। এই কুকীর্তি, সরকারের বয়ান আন্তর্জাতিকমহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে শুধু খাটো করেনি। আন্তর্জাতিকমহল কার্যত ছিঃছিক্কার করছে। তাদের একটা প্রশ্ন – বাংলাদেশ হচ্ছেটা কি?
ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে রীতিমতো ব্যথিত দিল্লির আশ্রয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ভারতের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে একজন ছাত্রনেতার নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশে হিংসাকে উসকে দিয়েছে। বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। ’ হাসিনা বলেন, ক্ষমতা থেকে তিনি সরে যাওয়ার পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি রীতিমতো খারাপ হয়েছে। এই অস্থিরতা শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং এর প্রভাব পড়তে পারে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের ওপরেও। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে। ইউনূসকে সতর্ক করতে গিয়ে তাঁর বার্তা, এই ধরনের অরাজকতা দুই দেশের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
হাসিনা এই প্রথম যে তদারকি সরকারকে সতর্ক করলেন, হুঁশিয়ারি দিলেন তা নয়। কিন্তু তদারকি সরকারের চরিত্র বদলায়নি। দীপু দাসের ঘটনায় তারা গাড্ডায় পড়ে গিয়েছে। তাই, সে দিক থেকে নজর ঘোরাতে তারা ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যে বিবৃতি দিয়েছে। এই ঘটনায় ভারতের নানা প্রান্তে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। তারা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ থেকে কড়া ভাষায় এই বর্বরোচিত আচরণের প্রতিবাদ করা হয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত অবিলম্বে দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করা। অবাধে সুষ্ঠ নির্বাচন যাতে করা যায় সে দিকে মনোনিবেশ করা।
ভারত কিন্তু চুপচাপ বসে নেই, সেটা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের বক্তব্য স্পষ্ট। জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির দিকে নজর রয়েছে ভারতের। আমাদের আধিকারিকেরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। সে দেশে যেভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বলেছি, ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ’
বাংলাদেশে সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছৌঁয়া, শুধু সস্তা হল লাশ। তৌহিদি জনগনকে খুশি করতে হলে শুধু টাকা পয়সা এবং...
Read more












Discussion about this post