বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মাদ ইউনূস লন্ডন সফরে গিয়েছেন। তার চার দিনের লন্ডন সফর ঘিরে নানা রকম জল্পনা উঠে আসছে। কখনও খবর এসেছিল, তিনি বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। আবার কখনও খবর এসেছিল, তিনি নানা রকম চোখাচোখা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। যে প্রশ্নের উত্তর দিতে নাকানি চোবানি খেতে হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা কে। এবার লন্ডনে এক অন্য সমাবেশ সামনে এল। যেখানে আলতাব আলী পার্কে বিপুল মানুষের ভিড়। সেখানে নির্বাচন বিরোধী স্লোগান ওঠে। পাশাপাশি বলা হয়, আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন। অর্থাৎ এতদিন ছাত্রনেতা বা ইউনূস জোর দিয়ে এসেছেন, সেটাই দেখা গেল লন্ডনের মাটিতে। এমনকি, মহম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানাতে হোটেলের সামনে সকাল থেকে ভিড় জমান বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের কারও কারও হাতে ব্যানার, ইউনূসের ছবি লক্ষ্য করা যায়। তাদের অনেকেই জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস-সহ একাধিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির ব্যানারেও কিছু ব্যক্তিকে দেখা যায়। এমন ছবি সামনে এসেছে। অর্থাৎ বোঝাই গেল, কিছু মানুষ ইউনূসের সমর্থনে স্লোগান তুলছেন এবং নির্বাচনবিরোধী একটা জনমত তৈরি করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আদৌ কি এটি স্বতঃস্ফূর্ত কোন সমাবেশ? নাকি কৃত্রিমভাবে আয়োজন করা হয়েছে? যদিও এই সমাবেশ পূর্বনির্ধারিত ছিল। তবে ইউনূসের সমর্থনে তারা স্লোগান দিতে থাকে।
অন্যদিকে ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছিল মহম্মদ ইউনূস লন্ডন পৌঁছতে। সেখানে চরম অপমানজনক পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন বলে খবর। হোটেল থেকে আর বের হতে পারছিলেন না বলে খবর। অন্তত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি থেকে সেটা স্পষ্ট নজরে এসেছিল। একদিকে ইউনূসের বিরুদ্ধে পোস্টার লক্ষ্য করা যাচ্ছিল, অন্যদিকে হাসিনার পক্ষে পোস্টার নজরে এসেছিল। পাশাপাশি হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর মুক্তির দাবিতে ফেস্টুন দেখা গিয়েছিল। খবর পাওয়া যাচ্ছে, প্রধান উপদেষ্টা যে হোটেলে রয়েছেন, সেখানে শত শত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তারা। এছাড়াও লন্ডনের বিভিন্ন জায়গাতে প্রতিবাদ বিক্ষিপ্তকারে লক্ষ্য করা গিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের আগেই মনে করা হচ্ছিল, তিনি বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন। তার কারণ বাংলাদেশের বাইরে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সমর্থক ও নেতা রয়েছেন লন্ডনে। আর সেখানেই আওয়ামী লীগের প্রতিরোধের মুখেই পড়লেন তিনি। তারা এককাট্টা হয়ে এই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে বলে খবর। এটি একটি দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে। কারণ বিদেশের মাটিতে কোনও রাষ্ট্রপ্রধানকে এভাবে কোনও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়নি সম্ভবত। বলছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।এমনিতেই বাংলাদেশের অন্দরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরোধী শক্তিগুলি মাথাচারা দিয়েছে। বিক্ষোভ, আন্দোলনে মুখরিত দেশের রাজপথ। এবার দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও বিক্ষোভের মুখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তবে আলতাব আলী পার্কে তার সমর্থনে জমায়েত দেখে নতুন একটি আলোচনার জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক আঙ্গিনায়।
Discussion about this post