‘ভারতে যারা সেপারেটিস্ট আছে, বাংলাদেশে আমরা তাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার্স রয়েছে, সেটাকে ভারত থেকে আলাদা করে দেব।’
এই হুমকি কার, সেটা অবশ্যই জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই হুমকি এল বিজয় দিবসের একদিন আগে। বিজয় দিবসের একদিন পর আবার এল হুমকি। সেই হুমকি এতটাই কদর্য এবং অসম্মানের, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। পদ্মাপারে একজনকে বলতে শোনা গেল ‘খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ভারতীয় হাইকমিশনারকে শুধু ধমক না, লাথি দিয়ে বের করে দেওয়া উচিত ছিল।’ ভাবা যায়! আক্ষরিক অর্থেই ভাবা যায় না। এই দুই হুমকির পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটি দিন। তদারকি সরকার কিন্তু ওই নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। করবেই বা কোন সাহসে? করলে তো পাঁঠা কাটার মতো করে কেটে ফেলবে। এবং অবশ্যই সেটা হালালের কায়দায়।
কে দিয়েছেন এই জ্বালাময়ী ভাষণ ? এই জ্বালাময়ী ভাষণ হাসনাত আবদুল্লার। শোনা যাক তার গলায়
কত বড়ো দুঃসাহস হলে একটি দেশের একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বলতে পারে, হাইকমিশনারকে লাথি মেরে বের করে দেওয়া উচিত ছিল। আর তার জন্য যে ডোজ দেওয়ার ভারত সেটা দিয়ে দিয়েছে। সাউথব্লক থেকে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে। তাঁকে ডেকে পাঠান ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম। বিজয় দিবসের একদিন পর আবার পদ্মাপার থেকে এলে হুমকি। এবার সরাসরি ভারতের হাইকমিশনারকে লাথি মেরে বের করে দেওয়ার হুমকি।
বলা হচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে কখনও পড়েনি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। যেন ঠিক এই মুহূর্তের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে তাদের একমাত্র শত্রুদেশ ভারত। হাসিনার আমলে বাংলাদেশের শত্রু দেশ ছিল পাকিস্তান। আর মহামান্য ইউনূসের বদান্যতায় ভারত এখন তাদের কাছে পয়লা নম্বর শত্রু দেশ। হাসনাতের হুমকিতে গর্জে উঠলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার কোনও চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না। গত ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসে অসমের মুখ্যমন্ত্রী শর্মা সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন। সেই সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে বাংলাদেশের একাংশ থেকে বারবার এই ধরনের মন্তব্য ভেসে আসছে। এটা ভারতের সার্বভৌমত্বের জন্য বিপজ্জনক। উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার যে উদ্ভট স্বপ্ন কেউ কেউ দেখছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অবাস্তব।’
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। সেই সঙ্গে ভারত একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। তাই ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সাহস যেন কেউ না দেখায়। হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশ কী ভাবে এমন ধৃষ্টতা দেখায়? ভারতের মানুষ কিন্তু এ সব চুপচাপ মেনে নেবে না।’ হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, এই ধরনের মানসিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে এটা বুঝতে হবে। এমন আচরণের সামনে ভারত নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না।’ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ টেনে ঢাকাকে তিনি ভারতের সামরিক শক্তির কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। হিমন্তের সাফ কথা, ‘ভারতের মতো বড় শক্তির মোকাবিলা করতে হলে বাংলাদেশকে ১৪ বার জন্মাতে হবে।’












Discussion about this post