পহেলগাও সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের অবস্থান নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। আবার সেই সেনাপ্রধানের নেতৃত্বেই সন্তুষ্ট নয় পাক সেনারা, সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই উঠিয়ে এল পাক সেনাবাহিনীতে ইস্তফার ঝড়।
ভারতের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে ই ভারত পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, আর দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দেশে। মুনির নিখোঁজ হওয়ার বেশ কয়েকটি দাবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, কেউ বলছেন তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন, আবার কেউ দাবি করেছেন যে তিনি রাওয়ালপিন্ডির একটি বাঙ্কারে আত্মগোপন করে আছেন।
আর ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের চাপে পড়ে এবং সামরিক ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হয়ে যখন পাকিস্তানের কঠিন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ওপর ভরসা করছে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তখন দেশের উপস্থিত নেই সেনাপ্রধান। আবার এ সেনাপ্রধানের নেতৃত্বেই মনোবল ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে দাবি করে সেনা বাহিনীর একাধিক সেনা জওয়ান স্থাপন দিচ্ছে তখন এই বিষয়গুলি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি হবে তা বলাই বাহুল্য। তবে বিভিন্ন মহলে বিতর্কে ঝড় উঠতেই, পাক সেনাবাহিনীর উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত করতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং জেনারেল মুনিরের একটি ছবি পোস্ট করেছে, যার সাথে তারিখ এবং স্থান উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পোস্ট করা ওই ছবিটিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে ছবিটি কোথায় এবং কখন তোলা হয়েছে, তা জেনারেল মুনিরের নিখোঁজ হওয়ার জল্পনা-কল্পনা খণ্ডনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবেই দেখা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের তরফে।
আবার দেখা যাচ্ছে যখন ভারতের সরাসরি নিশানায় রয়েছে পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারত বিশ্বের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেই সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে ভাঙ্গনের সুর। পাশাপাশি কৌশলগত কূটনৈতিক পদক্ষেপে ভারত বাজিমাত করেছে। সিন্ধু জলচক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানকে জলশূন্য করার পরিকল্পনার দিকে এগিয়ে চলেছে ভারত সরকার সেখানে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পাকিস্তানের তরফ থেকেও হুংকার আসছে। তবে সেটি কতটা জোরদার তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। সম্প্রতি, ইসলামাবাদের দাবি ১৩০টি পরমাণু অস্ত্র ভারতের দিকে তাক করে রেখেছে পাকিস্তান। এমনটাই জানিয়েছেন পাকমন্ত্রী হানিফ আব্বাসি। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে ভারতের উদ্দেশে তার সরাসরি হুঁশিয়ারি, ভারত যদি জল বন্ধ করে, তবে যুদ্ধ হবে। তার জন্য ভারতকে তৈরি থাকতে হবে। মন্ত্রীর দাবি, পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে গোপন ডেরায় ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রাখা হয়েছে। ১৩০টি পরমাণু অস্ত্র রাখা আছে শুধু ভারতের জন্যই। সেগুলির অবস্থান সম্পর্কে খুব বেশি কেউ অবহিত নন। ঠিক কি বলেছিলেন পাক মন্ত্রী হানিফ আব্বাসী শুনুন
অর্থাৎ, পাকিস্তানের কাছে যে পরমাণু অস্ত্র মজুত রয়েছে, ভারত তা জানে, আর এই পরমাণু অস্ত্রের ভয়েই এখনও পাকিস্তানকে আক্রমণ করতে পারছে না ভারত,দাবি পাক রেল মন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসী হামলার পরই পাক সেনাবাহিনীতে গনইস্তফার ছবি উঠে এসেছে। ইতিমধ্যেই সিন্ধু ও নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ারে একাধিক সেনা কর্মী ইস্তফা দিয়েছেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদার আধিকারিকরাও ইস্তফা দিয়েছেন। সূত্র বলছে, গত ২ থেকে ৩ দিনে কমপক্ষে ২৫০ জন সেনা অফিসারের কথা দিয়েছেন এবং ইস্তফা দিয়েছেন প্রায় ১২০০ জন পাক সেনা জওয়ান। আর এই ইস্তফার কারণ হিসেবে বেশ কিছু সাধারণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সূত্র বলছে বেশ কিছু মাস আগে পাক সেনাদের তরফ থেকে একটি চিঠির মাধ্যমে বলা হয়েছিল সেনাপ্রধানের আসিম মুনিরের নেতৃত্বে তারা সচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। তার পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছিল বেশ কিছু সেনা। আর এখন পাক সেনাবাহিনীতে গত দু’দিনে অধিক পরিমাণে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনা বিরম্বনা বাড়াচ্ছে পাক সেনাবাহিনীতে। আবার পাকিস্থানে সেনাপ্রধানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু পাক প্রশাসনের নানাবিধ চেষ্টার পরেও, সত্যি এই মুহূর্তে, সেনাপ্রধান নিখোঁজ কিনা তা নিয়ে বিস্তর জল ঘোলা হচ্ছে ।
Discussion about this post