‘তৌহিদ রহমান, যদি তোমরা খুনি –হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করতে ব্যর্থ হও তাহলে শুধু তোমার পদত্যাগই না, শেখ হাসিনাকে সেফ এগজিট দেওয়ার দায়ে তোমাকেও আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবই ইনশ আল্লাহ।’
বিক্ষুব্ধ এক ছাত্রনেতার বাইট
এটা কার কথা, সে বিষয়ে যাওয়ার আগে কিছু কথা। এই কথা একটি মেয়ে এবং তাঁর পোষা একটি অজগর সাপকে নিয়ে। বেশ কিছুবছর আগে আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দুইকে নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। মেয়েটি একটি অজগর সাপ বাড়িতে নিয়ে আসে। সাপটি লম্বায় চার মিটার। দেখতেও বেশ স্বাস্থ্যবান। মেয়েটি সেই সাপটিকে ভালোই যত্ন আত্তি করত। অজগর সাপেরা যা খেতে পছন্দ করে, মেয়েটি সেই সাপটিকে খেতে দিত। আচমকাই সাপটি খাওয়া বন্ধ করে দেয়। মেয়েটিরও মন খারাপ হয়ে যায়।
মেয়েটি তাঁর পোষা অজগরটিকে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাঁকে প্রশ্ন করে – সাপটি কি রাতে আপনার সঙ্গে ঘুমাত? মেয়েটি বলে হ্যাঁ। ডাক্তারের পরের প্রশ্ন ছিল, রাতে ঘুমানোর সময় সাপটি কি আপনাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকত? এবারেও মেয়েটির জবাব আসে হ্যাঁ। তারপর ডাক্তার ওই মেয়েটিকে যা বলে, তা শুনে মেয়েটি থরথর করে ডাক্তারের চেম্বারে কাঁপতে শুরু করে। ডাক্তার তাঁকে বলে, ওই সাপটি আপনাকে চারপাশ দিয়ে জড়িয়ে ধরে, আপনার শরীরের মাপ নিচ্ছে। প্রস্তুত করছে আপনাকে আক্রমণ করার জন্য। সে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করেছে যথেষ্ট জায়গা খালি করতে যাতে আপনাকে সে সহজে জড়িয়ে ধরে গিলে খেতে পারে।
ইউনূসের অবস্থা এখন সে রকম। গত দেড় বছরের সময় ধরে তিনি যত দুধকলা দিয়ে কালসাপ, পুষেছিলেন, তারা এখন ফনা তুলে দাড়িয়েছে। তারা ঘিরে ফেলেছে যমুনাভবন। বাড়ির বাসিন্দা একবার বাইরে পা রাখলেই এক ছোবলে ছবি হয়ে যাবেন তদারকি সরকার প্রধান। সেটা বোঝা যাচ্ছে তৌহিদ রহমানের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বিক্ষুব্ধ নেতার বক্তব্য। এই নেতার নাম জানা যায়নি। তার মতন আরও অনেক নেতা আছেন, যারা ওই অজগর সাপের মতো ইউনূসকে এতোদিন জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল। শীতঘুম উধাও হওয়ায় তারা এখন ইউনূসকে গিলতে উদ্যত হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কটা বিগত ১৬ মাসে কতটা তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে সেটা আর নতুন করে বলার দরকার পড়ে না। প্রশ্ন, আর কতটা ক্ষারাপ হতে পারে। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও ভারতের পক্ষে, ভারতের পাশে। একটা সরকার, যে সরকারের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে, সেই সরকার দায়িত্বের সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ককে একেবারে খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশে একটা ভারত-বিরোধী শক্তি উত্থান হয়েছিল গত বছর হাসিনার ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর। সেই শক্তি এখন আরও বৃহৎ আকারে আত্মপ্রকাশ করেছে। তাদের একটাই স্লোগান, ভারতের আধিপত্যবাদকে সমূলে বিনষ্ট করতে হবে। এরা জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী পক্ষ। আর হাদি-কাণ্ড তাদের অক্সিজেন জুগিয়েছে। তদারকি সরকার হাদির বোনকে দিয়ে বলিয়েছে, যে হাদিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছে ভারতের ‘র’। যদিও কীসের ভিত্তিতে তাদের এই দাবি বা এই দাবির পিছনে তাদের হাতে কী প্রমাণ রয়েছে, তারা কিন্তু সেটা দেখাতে পারেনি। কিন্তু অদ্ভূত, কিম্ভূত একটা যুক্তি তুলে ধরেছে। সেই যুক্তি হল হাদি ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিল। তাই, তাকে দুনিয়া থেকে চিরকালের জন্য সরিয়ে দেওয়ার একটা চেষ্টা চালানো হয়েছে। যেটা ভারতের কাছে উদ্বেগের তা হল, সোমবারের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, দিল্লি যদি হাসিনাকে ফিরিয়ে না দেয়, হাদির হত্যাকারীকে তাদের হাতে তুলে না দেয়, তাহলে বাংলাদেশে ভারতের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা হবে।












Discussion about this post