নাহঃ, সাহসের তারিফ করতেই হচ্ছে।
তারিফ না করে উপায় বা কিই? রাস্তায় কয়েক হাজার মানুষের মিছিল। তাদের গন্তব্য প্লট নং ১-৩, পার্ক রোড, বারিধারা, ঢাকা ১২১২। এটা ভারতের দুই আমলার সরকারি বাসভবনের ঠিকানা। এই দুই আমলার মূল দায়িত্ব হল দুই দেশের মধ্যে সমন্বয় রেখে চলা। যাকে বলা হয় দৌত্য করা। তাঁদের মতো দিল্লিতেও আছেন এক মার্কিন আমলা। তাঁর সরকারি বাসভবনের ঠিকানা – পঞ্চশীল মার্গ, চাণক্যপুরী, নিউ দিল্লি, ১১০০২১। তিনি আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে দৌত্য করেন। নিয়ম হল, তাঁরা যে দেশে বসবাস করেন, সেই দেশের প্রধান দায়িত্ব হল তাঁদের আত্মসম্মান, মান-মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা। এমন কোনও কাজ যাতে কোনওভাবেই সংঘটিত না হয়, যে কাজ সে দেশের মানসম্মানকে বিশ্বের কাছে কালিমালিপ্ত করে। অথচ সেটাই হয়েছে পদ্মপারে। হয়েছে বললেও খুব কম বলা হবে। বারিধারার ওই সরকারি বাসভবনের ১০০ মিটারের মধ্য দাঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্লোগান। একটি স্লোগান – ‘যে ভারত খুনি পালে, সেই ভারত ভেঙে দাও’। দ্বিতীয়টি – ‘বাবরের পথ ধরো, সেভেন সিস্টার্স স্বাধীন কর’ ।
বাবরের পথ ধর, সেভেন সিস্টার্স স্বাধীন কর।
প্রথম জ্বালাময়ী ভাষণের ব্যাখ্যা। কাকে বলা হয়েছে খুনি। খুনি বলা হয়েছে হাসিনা এবং আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীদেরকে। আর ভারতকে ভেঙে দেওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে, যেহেতু ‘খুনি’ এই জননেত্রীকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। তাকে সযত্নে রেখে। সেটা যেমন সহ্য হচ্ছে না তদারকি সরকারের, সহ্য হচ্ছে না ওই সব উঠতি বিপ্লবীদের। আর সেভেন সিস্টার্স নিয়ে কতবার যে পদ্মাপার থেকে হুমকি-ধমকি এল, তার তল পাওয়া যাবে না। আগামীদিনেও যে পদ্মাপারে ইউনূসের পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে ওঠা নেতাদের মুখে এই নিয়ে হুমকি শোনা যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের দফতর ঘিরে যা হল, তার তারিফ না করে সত্যিই আর থাকা যাচ্ছে না। তারিখ করতে হচ্ছে ওই স্লোগানের। কতবড় জ্বালাময়ী স্লোগান ভাবা যায়!।
এদের জন্য গত কয়েকমাস ধরে টাকা খরচ করে খাতির যত্ন করেছেন তদারকি সরকার প্রধান। আসলে এই জুলাই জঙ্গিরা এবং তদারকি সরকারের মনের গোপন ইচ্ছা হল, তারা চাইছে ভারত কোনওভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক। তাই, তারা প্রতিনিয়ত ভারতকে উস্কানি দিয়ে চলেছে,লাগাতার অপমান করে চলেছে, অপদস্ত করে চলেছে। মুশকিল হল এরা বাংলাদেশের ইতিহাস মনে রাখে না।
বিএনপির লুৎফর জমনের নাম উল্লেখ করতে হয়। ১০ ট্রাক অস্ত্র কেলেঙ্কারির উল্লেখ করতে হয়। এই বিএনপি নেতার উদ্দেশ্য ছিল কোনওভাবে ওই সব অস্ত্র ভারতে আলফাদের হাতে তুলে দেওয়া। সেভেন সিস্টার্সকে ভারতের থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে এই অস্ত্র জোগাড় এবং তা পাচারের চেষ্টা। কিন্তু অপারেশন সফল তো হয়নি। উলটে লুৎফরের রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
ওই দুই স্লোগান দিয়ে জুলাইয়ের বিপ্লবীরা বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশন দখল করতে চেয়েছিল। সেটা হলে তদারকি সরকার এবং তাঁর প্রধানের কী পরিণতি হবে সেটা বুঝতে বিন্দুমাত্র দেরি হয়নি সংশ্লিষ্টদের। তাই, বাধ্য হয়ে মোতায়েন করতে হয় পুলিশ। ব্যারিকেড ছিল দুটি। প্রথম ব্যারিকেডটি জুলাই জঙ্গিরা ভেঙে ফেলতে সক্ষম হলেও দ্বিতীয় ব্যারিকেডটি তারা ভাঙতে পারেনি। এই কীর্তি যারা করেছে, তারা বুঝতে পারছে না সেনাভবন থেকে শুধুমাত্র ছটি ইংরেজি বর্ণসমষ্টি কানে গেলেই এরা ঝাঁপিয়ে পড়বে। কোনও কিছুর পরোয়া করবে না।












Discussion about this post