প্রত্যেকবারই বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সংবাদ সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্ট সেরা দেশ হিসাবে কোনও না কোনও দেশকে বেছে নেন। এইবার তাদের চোখে ২০২৪-এ সেরা দেশ বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে। তবে এটি উন্নয়নের সাফল্য নয়, বাংলাদেশকে সেরার শিরোপা দেওয়া হয়েছে আসলে শেখ হাসিনার জমানার সরকার পতন ঘটানোয়।
বাংলাদেশের ক্ষমতায় রয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। যার প্রধান উপদেষ্টা মহম্মুদ ইউনূস। তিনিই এখন দেশকে পরিচালনা করছেন। তবে কীভাবে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন, তার পিছনে রয়েছে ইতিহাস। ছাত্রদের কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। তখন হাসিনার জমানা। শেখ হাসিনা দেশ চালাচ্ছেন। কিন্তু মাত্র কিছু দিনের মধ্যেই গোটা দেশের লাগাম যেন শেখ হাসিনার হাত থেকে চলে যায়। প্রবল চাপে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন পূর্বতন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতে আশ্রয়ে নেন। এখনও তিনি ভারতের কোনও একটি নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে রয়েছেন। তারপরই দেশকে পরিচালনা করার জন্য গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকার। দেশের অরাজকতার পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের প্রধান করা হয় মহম্মুদ ইউনূসকে। তারমধ্যেই ব্রিটিস সংবাদ সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্টের এই রিপোর্ট সামনে এল। ইকোনমিস্ট বলছে, যেভাবে বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনা গোটা দেশের উন্নয়ন ঘটিয়েচেন তা প্রশংসনীয়। কিন্তু তাঁর সরকারের জমানায় ১৫ বছরের মধ্যে ১৭ কোটি মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছেন। এমনটাই অভিযোগ উঠে আসছে। দুর্নীতিও ছিল বেশি। সেই কারণেই মানুষের রোশে পড়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে।
তবে এই রিপোর্ট, সামনে আসতে ইউনূস প্রশাসনের উৎফুল্লের কোনও কারণ নেই। তার কারণ, শান্তির জন্য নোবেল পাওয়া ইউনূসের শাসনকালে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে উগ্র মৌলবাদীদের বাড়বাড়ন্ত চোখে পড়ার মতো। যা একেবারেই দেশের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় নেই, তা বোঝাই যাচ্ছে।
তবে শুধু ইউনূসই নন, দেশের আরও একটি ক্ষমতাধারী দল বিএনপিও অস্বস্তিতে পড়েছে। তারা বলছে, বিএনপি একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দল। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এখন অন্তবর্তী সরকার গড়ে ওঠার পর স্থায়ী সরকারের জন্য দ্রুত নির্বাচন চাইছে বিএনপি দল। কিন্তু তার আগে দ্য ইকোনমিস্টের এই ধরণের মূল্যায়ন কার্যত অস্বস্তিতে ফেলেছে দলটিকে।
অন্যদিকে ইউনূস প্রশাসনের মূল্যায়নও কার্যত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। কারণ, পশ্চিমী দুনিয়ার সমর্থন পাচ্ছিলেন ইউনূস। কিন্তু এই ধরণের রিপোর্ট সামনে আসার পর সেই সমর্থন ইউনূস হারাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন আগে ব্রিটিশ সরকার তাদের নাগরিকদের সাবধান করে দেয়। বাংলাদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তক করে। কারণ বাংলাদেশে যেভাবে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে, তাতে তাদের নাগরিকদের উপর আঘাত আসতে পারে। যদিও এই বিয়ে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদ জানায়। তবে তাতে বিশেষ কোনও আমল দেয়নি ব্রিটিশ সরকার।
Discussion about this post