হাসিনা এবং তাঁর আমলের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামালকে নিয়ে বাংলাদেশ গান শোনাবে বলে জলসা বসিয়েছিল। সেই জলসা শেষ হয়েছে। তারপর শুরু হল এই দুইকে হাতে পাওয়া নিয়ে নাটক। নাটক দেখানোর কথা ছিল যমুনাভবনে। খোলা হয়েছিল টিকিট কাউন্টার। একটা টিকিটও বিক্রি হয়নি। হাদিকে নিয়ে দিল্লির সঙ্গে এক প্রকার কুস্তি কুস্তি খেলা খেলল ঢাকা। সেই খেলা শেষ। অতঃকিম? মানে, নতুন কি খেলা তারা খেলবে?
পদ্মাপারে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অন্য এক খেলার গল্প। সেই গল্প হল ইউনূস সরকারের পতন ঘটিয়ে সেখানে একটি বিপ্লবী সরকার গঠনের গল্প। প্রশ্ন উঠছে, কারা এই বিপ্লবী সরকারের পতন ঘটাবে? কুশীলব কারা? তাহলে কী সেই বিল্পবী সরকার গঠনের কুশীলব তাঁরা যারা হাদির শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছিল। এই বিশাল মানুষের জমায়েত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে? হাদির মৃত্যু এবং তাঁর শেষযাত্রায় যারা সামিল হয়েছিল, তারা কি এই ঘটনা থেকে ফয়দা তোলার চেষ্টা করছে? হাদিকে সমাহিত করার পর শাহবাগে একটি বড়ো মিছিলের আয়োজন করা হয়। ইনকিলাব মঞ্চ থেকে হাদির হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। আর সেই জনসভা থেকে বাংলাদেশে একটি বিপ্লবী সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়। সে সরকারের প্রধান করা হবে হয় বাংলাদেশের কোনও একটি জনপ্রিয় পত্রিকার সম্পাদককে অথবা গত বছর যারা জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে কোনও একজনকে নির্বাচিত করা হবে।
একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম আলোর দফতরের সামনে যখন দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়, সেই সময় পত্রিকা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তদারকি সরকারের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তদারকি সরকার সেই আবেদনে সাড়া দিতে অস্বীকার করে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ইউনূস জানান, প্রথম আলোকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। সমান সহযোগিতা করা হবে ডেইলি স্টারকে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল দুষ্কৃতীরা নির্বিবাদে ভাঙচুর চালিয়েছে, আগুন লাগিয়েছে। তার কয়েক ঘণ্টা পরে পুলিশ সেখানে যায়। ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার দুই পত্রিকারও হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন এখানে। প্রশ্ন সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে। সরকার যে সহযোগিতার কথা বলছে, সেটা কি আর্থিক সাহায্য? সেই আর্থিক সাহায্য দিয়ে কি এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া যাবে।
একটা কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমের তরফে আগেই বলা হয়েছে, নির্বাচন-পূর্বে বাংলাদেশ রীতিমতো উত্তাল হবে। নানা প্রান্তে নাশকতার পাশাপাশি শোনা যাবে অস্ত্রের ঝনঝনানি। আর এরকম পরিস্থিতি হলে যে নির্বাচন কোনওভাবেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না, তা সহজেই অনুমেয়। বলা হচ্ছে, বিশেষ একটি গোষ্ঠী বাংলাদেশের নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি কিন্তু ক্রমশ সে দিকেই যাচ্ছে।
ইউনূসের শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানাতে গিয়ে তদারকি সরকার প্রধান ইউনূস দেশবাসীকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন? তাঁর কাছে কী খবর ছিল, হাদির কিছু হলে বাংলাদেশে আগুন জ্বলবে। হয়েছেও তাই। কিন্তু সরকারকে কি তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেল। আগুন জ্বলল, লুঠ হল, সংবাদপত্র অফিসে হামলা হল। আর সরকার হাত গুটিয়ে বসে সেই সব ঘটনা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করল।












Discussion about this post