‘কনগ্র্যাচুলেশনস মিঃ ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলছি’, এমনই এক ফোন বুধবার মধ্যরাতে নয়া দিল্লি থেকে ওয়াশিংটনে কি গিয়েছিল? বিষ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, হ্যাঁ গিয়েছিল। শেখ হাসিনা এবার সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করে কথা বলেছেন। যা কার্য়ত স্বীকার করে নিয়েছেন ট্রাম্প ঘণিষ্ট এক রিপাবলিকান নেতা। এক মার্কিন টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, বাংলাদেশের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন এসেছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে।
উল্লেথ্য, মঙ্গলবারই আওয়ামী লিগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি চিঠি শেয়ার করা হয়েছিল। সেখানে হাসিনা লিখেছেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বাংলাদেশের মানুষের তরফে আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি”। আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করেছেন, সেই মুহূর্ত থেকেই আওয়ামী লিগের সর্বোচ্চ নেত্রীর দেশে ফেরার স্বপ্ন আরও চওড়া হতে শুরু করেছে। কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এই স্বপ্ন বাস্তবেও পরিনত হতে পারে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে যারা কাটাছেঁড়া করেন, তাঁরাও বলছেন নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে ফের পালাবদল হতেই পারে।
যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ দাবি করছেন, ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে কতটা কী করবেন, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। কারণ তিনি আনেকটাই খামখেয়ালী মানসিকতার মানুষ। তাঁদের যুক্তি, মার্কিন ভোটের প্রচারে ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর আক্রমণ নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটা আসলে তাঁর ভোট আদায়ের কৌশল ছিল। কিন্তু এখানে এক্স ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। তাই বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূস সরকার খুব একটা স্বস্তিতে নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিজয়ী বার্তা পাঠিয়েও তিনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না। সূত্রের খবর, বুধবার গভীর রাতেই ঢাকায় জরুরী বৈঠকে বসে বাংলাদেশের তদারকি সরকার। জানা যাচ্ছে সেখানে একমাত্র মুহম্মদ ইউনুস ছাড়া তদারকি সরকারের অন্যান্য সমস্ত উপদেষ্টারাই উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৈঠকে পরবর্তী রণকৌশল হিসেবে ঠিক হয়েছে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ডিসেম্বরেই আমেরিকা যাবে। তাঁরা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এবং উচ্চ পদস্থ মার্কিন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি চেষ্টা করা হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও কথা বলার। না হলে রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষনেতাদের মধ্যে কারও সঙ্গে আলোচনায় বসার চেষ্টা করা হবে। কারণ ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের পদে শপথ নেওয়ার আগেই পরিস্থিতি যদি অনুকূলে আনা যায় সেই চেষ্টা করতে চাইছে বর্তমান তদারকি সরকার। এরমধ্যেই শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনও এক আওয়ামী নেতার ফোনালাপ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনাকে নির্দেশ দিতে শোনা যাচ্ছে রবিবার বাংলাদেশে বড় প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করার। সেখানে ট্রাম্পের ছবি দেওয়া প্ল্যাকার্ড রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর বাংলাদেশ ছাড়ার পর যত হত্যা, অত্যাচার হয়েছে তার খতিয়ান তৈরির নির্দেশও দেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সবমিলিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প মসনদে বসার আগেই আওয়ামী লিগ শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে মরিয়া।
Discussion about this post