গতকাল ১৮ ই ডিসেম্বর রাতে বাংলাদেশ ভয়ঙ্কর সহিংসতার একটি ভয়াবহ রাত পার করেছে। ভয়াবহ ঘটনায় যখন উত্তাল বাংলাদেশ, দেশের নাগরিকরা যখন ভয়ে আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন তখন হয়ত শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মহম্মদ ইউনুস ও সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ্জামান। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র তথা ছাত্র নেতা শরীফ ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ঘটনার দায় চাপল সরাসরি ভারত ও আওয়ামীলীগের দিকে। ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেই জুলাই সন্ত্রাসীরা রাস্তায় নেমে ভারত বিরোধিতায় মেতে ওঠে। হাদির মৃত্যুটি ছিল পরিকল্পিত। ধাপের পর ধাপ বুদ্ধি খাটিয়ে হাদিকে সমূলে উগরে ফেলার প্ল্যান কষে ফেলা হয়েছিল আগেই। এরপর সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর সংবাদ আসার পরেই তারা স্ব-মহিমায় নিজেদের খেল শুরু করে দিলেন।
১৮ ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জুড়ে বাংলাদেশের ছাত্র – জনতার আইকন হাদির মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর জুলাই অভ্যুত্থানের থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করে বাংলাদেশ জ্বলে ওঠে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে টার্গেট করে প্রথম আলো, ডেইলি ষ্টার, ছায়ানট, ধানমন্ডি ৩২, ভারতীয় হাই কমিশনের অফিস, উত্তরা বনানী আবাসিক এলাকা ভাংচুর ও সাংবাদিক নুরুল কবির, ধর্ম অবমাননার কারণে ময়নমনসিংহের একজন হিন্দুকে পিটিয়ে মেরে গাছে ঝুলিয়ে জ্যান্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, এছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এই আক্রমণের তালিকাটি সুচারুভাবে করা হয়েছে যাতে বাংলাদেশকে লিবারাল ও সেক্যুলার কাঠামো থেকে সরিয়ে একটি উগ্র ধর্মীয় নিরাপত্তা রাষ্ট্রে পরিণত করা ও সরিয়া আইন জারি করা এবং নির্বাচন স্থগিত করার উদ্দেশ্যে দেশে নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। ইউনূসের ক্ষমতার মসনদে টিকে থাকতে সুপরিকল্পিত এই হাদির মৃত্যু তার কাছে অনেক জরুরি ছিল। হাদির মৃত্যুকে অজুহাতে রূপান্তরিত করে জুলাই সন্ত্রাসীদের উস্কে দিয়ে তারা রাষ্ট্রকে জ্বালাচ্ছে। কিন্তু সরকার চাইলেই এই সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারত কিন্তু ক্ষমতালোভী সরকার চায়নি।
অন্যদিকে, হাদি সঙ্কটজনক অবস্থা কাটিয়ে উঠলে সরকারকে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হত, যেমন – হাদিকে খুন করল যে কথিত খুনি ফয়সাল তাকে জামিনে মুক্ত করল কে ? কেন ছাড়া হল তাকে ? বিএনপি ঘেষা আইনজীবীদের সাথে তার যাতায়াত কেন ? কেন ফয়সাল হাদির অফিস যাতায়াত করত নিয়মিত ? কিন্তু হাদির মৃত্যু এই সব প্রশ্নকে ধামা চাপা দিয়ে দিল। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই সরকার এই সকল প্রশ্ন থেকে হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। সাথে দেশের এই উত্তাল পরিস্থিতির অজুহাতে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ পাওয়া গেল। তাই বেঁচে বেঁচে সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ছাত্র নেতা ওসমান হাদিকেই গুলি করা হল। এই সকল কিছুর পিছনে একটাই উদ্দেশ্য তা হল ক্ষমতায় টিকে থাকা। ইউনুস চান যে দেশে জরুরি অবস্থা চালু হোক যাতে তিনি ক্ষমতায় আরও বেশ কয়েকটা দিন থাকতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা অন্য। দেশের এই অবস্থায় হয় ইউনুস থাকবেন না হয় তাকে ক্ষমতার পুরোটা ছেড়ে যেতে হবে তাদের হাতে যারা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল।












Discussion about this post