বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান এখন ভারতের সাহাষ্য চাইছে তা কার্যত স্পষ্ট। তার কারণ সদ্য বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য ভারত একটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্র। ঢাকা এমন কিছু করবে না, যা ভারতের ভুকৌশলগত স্বার্থকে বিঘ্নিত করে। এটা উচিত নয় বাংলাদেশের। এইবার বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সবথেকে শক্তিশালী দল বিএনপি দলও কার্যত ইউনূস প্রশাসনকে চেপে ধরছে নির্বাচনের জন্য। আক্রমণও করছে বিভিন্নভাবে। এইবার বিএনপির রিজভি জামাতকে প্রশ্ন করে, ৭১-এর যুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল?
উল্লেখ্যযোগ্যভাবে, ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস ঘাঁটলে বোঝা যাবে, এই জামাত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের হয়ে ভোট দিয়েছিল। প্রসঙ্গত, ইউনূসের আমলে বাংলাদেশে ক্রমেই সক্রিয় হচ্ছে জেহাদি শক্তি। যাদের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গিরা হাত মেলাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। বাংলাদেশে বসে ভারতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর ছক কষা হচ্ছে বলে গোপন সূত্র থেকে খবর উঠে আসছে। ভারতকে ফাঁসাতে সক্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম। যারা আল কায়দার ছায়া সংগঠন হিসাবেই পরিচিত। যারা হাসিনার আমলে নিষিদ্ধ ছিল। পাশাপাশি এদের যোগ রয়েছে বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিন, হিজবুত তাহারির মতো জেহাদি গোষ্ঠীর সঙ্গে।
গত কয়েকদিনে আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রায় ১১ জন জঙ্গি ধরা পড়েছে অসম, কেরল, পশ্চিমবঙ্গের মতো একাধিক রাজ্য থেকে। ধৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন বই, উস্কানিমূলক নথিপত্র, মোবাইল ফোন, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এদের আসল উদ্দেশ্যই ভারতের মধ্যে নাশকতা ছড়ানো। পাশাপাশি ভারতের মধ্যে থাকা স্লিপার সেল গুলি সক্রিয় করা। অর্থাৎ বোঝায় যাচ্ছে, ভারতের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটছে। অনেক আগেই তারা ঘাঁটি গেরে বসে রয়েছে। এবাং তারা জাল বিস্তার করছে। যা নিয়ে চিন্তিত নয়া দিল্লি। এদিকে বাংলাদেশে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। টান পড়েছে বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে। কিন্তু মতবিরোধ থাকার পরও চাল, ডিম, আলু, লঙ্কা রফতানি জারি রেখেছে ভারত। তাই এদিন ওয়াকার-উজ-জামান স্পষ্ট করে দিলেন নিজেদের স্বার্থেই দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখতে হবে ঢাকাকে। অন্যদিকে ইউনূসের খুঁটি নড়বড় হতে শুরু করেছে। তার কারণ বিএনপি তীব্রভাবে বিরোধীতা করছে, যখন মুহম্মুদ ইউনূস জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো ছাত্রদের শহীদ বহলে ঘোষণা করেন। বিএনপির বক্তব্য, জুলাই-অগাস্টের ঘটনায় যাদের প্রাণ গেল তাদের আমরা সকলেই সম্মান জানায়, শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ৭১-এর যুদ্ধে শহীদের অস্বীকার করতে পারি না। এরপরেই দেখা গেল, সেনাপ্রধান দেখা কলেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ কেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন সেনাবাহিনীর প্রধান? খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎকার অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। তার কারণ, সেনাপ্রধান আগেই জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ কোনওভাবেই খারাপ কিছু চাইছে না। এখানেই আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ বলছেন, বিএনপির সঙ্গে মিলে সেনাপ্রধান জোট করে বাংলাদেশের মধ্যে একটি স্থায়ী সরকার গঠন করবে। আর এই অন্তবর্তীকালীন সরকার যেভাবে বাংলাদেশের মধ্যে অরাজকাত সৃষ্টি করছে, তা কোনওভাবেই মেনে নেবে না সেনাপ্রধান। সেই কারণেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বৈঠক অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
Discussion about this post