বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, হাসিনার দেশ ত্যাগ, তদারকি সরকার গঠন, এবং তার মাথায় বসানো মোহাম্মদ ইউনূসকে। এই সবটাই আগে থেকে পরিকল্পিত। আর এর পিছনেই নাকি আসল খেলয়ার ছিলেন বাংলাদেশের নিযুক্ত মার্কিন মার্শা বার্নিকার্ট। কিন্তু ট্রাম্পের লাল কার্ডে সরে যেতে হচ্ছে শ্রীমতী মার্শা বার্নিকার্টকে। ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের আগেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত। অনেকে বলছেন, নিজের পছন্দের আধিকারিকদের বসাতেই ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। সূত্রের খবর, ট্রাম্প শপথ গ্রহণ করার পরই ইউনূসের সঙ্গে বিশেষ পরিচিত বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকই কি বড় কোনও বার্তা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ? সেই প্রশ্নই উঠছে।
আমেরিকা অফিসিয়ালি শিকার না করলেও অনেকে বলছেন, মার্শা বার্নিকার্ট বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত থাকার সময় পরিকল্পনা করে গণঅভ্যুত্থান করে গোটা দেশের এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই নিয়েও খবরও হয়েছে। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন শেষবারের মতো প্রেস কনফারেন্স করে জানিয়ে দেয়, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির পেছনে আমেরিকার কোনও হাত নেই। এমনকি বাইডেনের তরফে এও বলা হয়, এটা বিশ্বাস করে না ভারতও। যদিও বর্তমানে মার্শা বার্নিকার্ট বিদেশ দফতরের মার্কিন ডিরেক্টর জেনারেল।
তবে দীর্ঘ অপেক্ষার ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথের পর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কি রাজনৈতিক পরিবর্তন হতে পারে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে প্রত্যেকে। বিশেষ করে বাংলাদেশের উপর কি প্রভাব পড়তে চলেছে, সেই নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুমুল আলোচনা চলছে। এদিকে
বাংলাদেশ সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত দূর্বল। ১৬ বছরের শাসনকালে বাংলাদেশের সামরিক শক্তি ভান্ডার প্রায় ফাঁকা করে ফেলেছে বাংলাদেশের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। গত বছরের ৫ ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান হয় বাংলাদেশে। গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয় ইউনুসকে। অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর সামরিক দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে প্রবল ভাবে। সম্প্রতি খবর এসেছে চীন থেকে যুদ্ধ কেনা হচ্ছে বাংলাদেশের তরফে। এর মধ্যেই বেজিং থেকে যুদ্ধ বিমান কেনা নিশ্চিত করেছে ঢাকা। অন্যদিকে মিসাইল কেনার কথা চূড়ান্ত করেছে পাকিস্তান থেকে। তবে সেটা কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশে কোনরকম শান্তি ফেরেনি। বরং বারে বারে বিভিন্ন ইস্যুতে অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। কখনো সনাতন হিন্দুদের ওপর লাগাতার অত্যাচার তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া এমনকি নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতনের খবর উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু গণমাধ্যম সূত্রে। এমনকি সেই খবর সম্প্রচার করেছে ভারতের একাধিক গণমাধ্যম। প্রথম দিকে ইউনুস একাধিক জায়গায় বলেছে মিথ্যে সম্প্রচার করছে ভারত। যদিও বা পড়ে সে সমস্ত ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেছেন তিনি। অর্থাৎ বাংলাদেশের অন্দরে যে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এর সঙ্গে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারির পর আরো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে সে দেশে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ এপার বাংলার রাজপথেও আছড়ে পড়েছিল। দিকে দিকে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল এই ঘটনায়। এমনকি ভারত সরকারও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু তারপরও টনক নড়েননি ইউনুস সরকারের। বরং উল্টে সেখানকার মাথা ছাড়া দেওয়া কট্টরপন্থী মৌলবাদীরা একের পর এক ভারতবিদ্বেষী মন্তব্য লাগাতার দিয়ে যাচ্ছে। তাতে রাস টানে নি ই তদারকি সরকার। সম্প্রতি সেভেন সিস্টার্স দখলের হুমকি এসেছিল বাংলাদেশ থেকে। শুধু তাই নয় কলকাতা দখলেরও হুমকি দিয়েছিল মৌলবাদীরা। তাতে অবশ্য মাথাব্যথা নেই ভারতের। একটি ৩৭ তম স্থানে থাকা দেশ চতুর্থ স্থানে থাকা দেশকে হুমকি দেয় কিভাব? এর পিছনে যে পাকিস্থানের হাত রয়েছে তা মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে পাকিস্তান, বাংলাদেশের খেলা কি এবার শেষ হতে চলেছে?
Discussion about this post