বাংলাদেশ ভারতকে ইলিশ পাঠাবে না, এই কথা প্রথম ইউনূস সাহেবের তাবেদাররা বলেনি। বলেছেন শেখ হাসিনার সরকার। বহুবার হাসিনা ইলিশ পাঠাতে আপত্তি করেছেন। একবারতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসিনাকে বলেছিলেন আমরা পদ্মার ইলিশ পাচ্ছি না কেন। তখন হাসিনা বলেছিলেন আগে পানি দাও তার পর ইলিশ পাবে। এটা একটা উদাহরণ যে হাসিনা ভারতের কাছে মাথা নিচু করে থেকেছে বা ভারতকে বড়ভাই ধরে নিয়ে তার দাদাগিরি সহ্য করেছে। হাসিনার পতনের পর, কে রাস্ট্রের হাল ধরবে তা বিশ্ব জানতে পারেনি, কিন্তু ফ্রান্স থেকে ইউনূস বলেছেন ভারতের সেভেন সিস্টার নিয়ে ভারতকে ভাবতে বাধ্য করাব। বর্তমান ছাত্র নেতাদের কথায় হাসিনা ছিলেন স্বৈরাচারী, ভোট দখল করেছেন। কিন্তু ইউনূস সাহেব এসে পাঁচ মাস পার করে এখন বলছেন ভোট ২০২৬ এ করানোর চেষ্টা করবেন, যদি তাদের সংস্কারের কাজ ততদিনে শেষ হয়ে যায় তবে। এতদিনে কি কি সংস্কার করেছেন-জানিয়েছেন দেশবাসীকে। শোনা যাচ্ছে ভোট দেওয়ার অধিকার ১৭ বছরে নামিয়ে এনেছেন এবং ২১ বছর হলেই এমপি হতে পারবেন দেশের ছাত্রজনগন। আসলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে কোন কিছু আগের থেকে বলা সত্যিই মুশকিল, কারণ বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে ভারত বিদ্বেষের ঠুলি পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।যার ফলে ভালো খারাপ প্রতিবেশী দেখার ধরণ বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কাছে।
এতদিন তো বাংলাদেশে, ভারতের পতাকার অপমান দেখেনি ভারত, যে রাষ্ট্রকে নিজেদের রক্ত দিয়ে তৈরী করে দেওয়া হল, তাদের থেকে সেভেন সিস্টার কেড়ে নেওয়ার হুঙ্কারও শোনেনি। আবার ভারতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর, তাদের থেকেই চাল চেয়ে পাঠানোর আবদারও দেখেনি। তাহলে দেশটা কোনদিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার এর আগেও হয়েছে। তার প্রমান বাংলাদেশ থেকে বাধ্য হয়ে ভারতে চলে আসা মানুষজনই প্রমান। এখন বাংলাদেশ যে জাতাকলের মধ্যে পড়েছে, সেটা হাসিনা থাকা কালিন বাংলাদেশ পড়েনি, তার কারণ হাসিনা ভালো করেই বুঝেছিল, দেশের সার্বোভৌমত্ব বজায় রাখতে গেলে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হয়।তবে এক্ষেত্রে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল ভুগতে হচ্ছে দেশত্যাগী হয়ে। কারণ হাসিনা বুঝেছিলেন কোন একটি দ্বীপ কোন একজনকে দেওয়ার ফল হবে, অন্যদের বিরাগভাজন হওয়া। তাই তিনি ভারত চীন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে চলছিলেন।কিন্তু ভারতের অগোচরেই তার পতন ঘটিয়ে দেওয়া হল।এখন সেনাপ্রধান বুঝেছেন বাংলাদেশের একটি দলের জনপ্রিয় স্লোগান ছিল খেলা হবে। এখন সেই স্লোগান তাদের দেশের দিকেই ঘুরে গেছে, কারণ অনেক দেশই এখন বাংলাদেশকে নিয়ে খেলতে চাইছে।তাই বাধ্য হয়ে তিনি তদারকী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।
তিনি বুঝেছেন এখন বাংলাদেশের জনগনকে বিশেষ করে যারা ছাত্র, তাদের মাথায় ভারত বিরোধী মনোভাব বা বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন কিছুর বিনিময়ে। এখন ছাত্র নেতারা প্রচার করছে ভারত তাদের উপর অত্যাচার করেছে। এখন প্রশ্ন ভারত কি অত্যাচার করেছে। ১৯৭১ এ পাকিস্তানের মত অত্যাচার করেছে, ত্রিশ লক্ষ্য নীরিহ জনগনকে হত্যা করেছে, নাকি বাড়়ীর মহিলাদের তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করেছে। ভারতের দোষ হল, ভারতের দোষ হল, বাংলাদেশের উন্নতির জন্য বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেছে। তার জন্য সেখানে অফিস খুলেছে, লোক পাঠিয়েছে, নতুন নতুন ব্যবসার দিক খুলে দিয়েছে।আর এটাই বাংলাদেশেী মৌলবাদীদের কাছে অত্যাচার। আর যারা বলেছিল আবৈধভাবে ২৬লক্ষ্য ভারতীয় সেখানে বসবাস করছে, তারাই তো এখন ক্ষমতায়। তো তারা সেটা এখন প্রমান করছেন না কেন। বাংলাদেশের মেধা স্বাস্থ্য শিক্ষার মান কতটা সেটা কি তারা জানে না। ছোট খাটো অসুখ করলেও ভারতের ভিসার জন্য লাইন দিতে হয় কেন, ভেবে দেখেছেন কোনদিন- নাকি বলবেন এটাও ভারতের কারসাজি আপনাদের শিক্ষা গ্রহনে বাঁধা দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশী মৌলবাদীরা কি এটা মনে করছেন, চীন যেমন পাকিস্তানিদের দিয়ে তাদের জুতো সাফ করায়, ভারতও যদি বাংলাদেশীদের সঙ্গে একই ব্যবহার করত, তাহলে সেটা হত সঠিক স্বাধীনতা। ভারত সেটা করেনি, উল্টে বাংলাদেশের সব জায়গায় দূতাবাস খুলে, তাদের বিভিন্ন দেশে পড়তে যাওয়ার সূযোগ করে দিয়েছে। অথচ সেই ছাত্ররাই প্রশ্ন তুলছে, বাংলাদেশে এত অফিস কেন খুলেছে ভারত। এই সবের মাধ্যমে ভারত নাকি বাংলাদেশকে তাদের অঙ্গ রাজ্য বানিয়ে ফেলেছে। সেই কারণেই তাদের ক্ষোভ পড়েছে ভারতের উপরে। হিন্দুদের উপরে। আর এই ভুলটা বুঝতে পেরেছেন সেনাপ্রধান, সেই সঙ্গে এটাও বুঝেছেন তদারকী সরকার কি চাইছে। তাই ইউনূস যখন তার প্রভুর কথা বলছেন। প্রভুরা যা বলতে বলছেন তাই বলেছেন। সেনাপ্রধান তখন ভারত এবং চীন তাদের কাছের প্রতিবেশী হিসাবে,তাদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ না করার হুশিয়ারী দিচ্ছেন ইউনূসকে।
Discussion about this post