সরাসরি হুমকি। হুমকি দেওয়া হয়েছে ভারতের এক আমলাকে। তিনি ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভর্মা। কী বলেছেন ? বলেছেন ‘ওই ভারতীয় হাইকমিশনারকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য শুধু ধমক না, লাথি দিয়ে বের করে দেওয়া উচিত ছিল।’ তারপরেও সে দেশের সরকার হাত গুটি বসে রয়েছে। যে বলেছে, তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা তো পরের কথা। উলটে তাঁকে প্রশ্রয় দিয়ে গিয়েছে। আর তার ফলশ্রুতিতে যা হওয়ার সেটাই হয়েছে। ভারতের উদ্দেশ্যে সে গাল দেওয়া শুরু করেছে। তাঁর এই আচরণে দিল্লি রীতিমতো বিরক্ত। একজন হাইকমিশনারকে কী করে একজন পাঁচ পয়সার নেতা এভাবে হুমকি দিতে পারে। ?
তাঁর ওই মন্তব্য শুধু দিল্লিকে চটায়নি। চটিয়েছে সেনাপ্রধান ওয়াকারকেও। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে ‘আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভুদে ভুলে একসঙ্গে কাজ করতে না পারেন, কাদা ছোঁড়াছুড়ি করেন, মারামারি কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে।’
গত কয়েকদিন ধরে পদ্মাপারের ওই নেতা একাধিক ভারত-বিরোধী মন্তব্য করে এসেছেন। কিছুদিন আগে তাঁর গলায় শোনা গেল সেভেন সিস্টার্স কেড়ে নেওয়ার হুমকি। কী বলেছেন পদ্মাপারের ওই নেতা। বলছেন, ‘আপনারা যেহেতু তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন, কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই ভারতে যারা সেপারেটিস্ট আছে, আমরা তাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার রয়েছে, সেই সেভেন সিস্টারকে ভারত থেকে আলাদা করে দেবে।’ এই পদ্মাপারের নেতার নাম হাসনাত আবদুল্লাহ। সেভেন সিস্টার্স নিয়ে কী বলছে ইউনূসের নয়নমণি?
শুধু কি ভারত থেকে সেভেন সিস্টার্স কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন? গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও হুমকি দিয়েছেন নেতাটি। কী বলছেন? বলছেন, ‘সাংবাদিকদেরকে বলব, বসুন্ধরার সাংবাদিকদেরকে বলব। বসুন্ধরার সাংবাদিকরা, বসুন্ধরার সাংবাদিক। খুনি হাসিনার পক্ষে এই বসুন্ধরার মিডিয়া কী বৈধতা উৎপাদন করেছে, আমরা ভুলে যাই না। এই বসুন্ধরা গ্রুপের সাংবাদিকরা আবার নগ্ন হয়ে অপরাধের বৈধতা উৎপাদনের জন্য আবার নেমে পড়েছে। আবার আরেকটা ১/১১ ঘটাতে তারা ষড়যন্ত্র করছে। ’
এখানেই শেষ নয়। রাজশাহীর বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যেও তিনি কার্যত হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গে টেনে হাসনাত বলেন, ‘প্রিয় রাজশাহীবাসী, এই অভ্যুত্থানে যাঁরা দাঁড়ি পাকাওয়ালা মানুষ…তারা কয়জন রক্ত দিয়েছে। আর যারা ছাত্র-তরুণ, তারা কয়জন রক্ত দিয়েছে। যারা সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ করতে চান, তাদের তরুণদের সাথে বসতে হবে। ’
তাঁর এই হুমকি বা ভারত-বিরোধিতা আজকের নয়। শুরু গত জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। বলা হচ্ছে, ঢাকা-দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্ক এত তলানিতে বোধহয় কোনওকালেই পড়েনি। দিল্লি কিন্তু এতোদিন ধরে সংযম দেখিয়ে এসেছে। যে দিন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভর্মাকে ঢাকা তলব করে বসিয়ে রেখে বেউজ্জত করেছে, সেদিন দিল্লির ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটেছে। দিল্লিও তাদের হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠায়। জানিয়ে দেয়, যেভাবে হাইকমিশনারের মতো উচ্চপদস্থ আমলাকে ডেকে পাঠিয়ে অপমান করা হয়েছে, সেটা যাবতীয় শিষ্টারচারের উর্ধেব উঠে গিয়েছে। এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।












Discussion about this post