যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। সেটি তিন পৃষ্ঠার একটি চিঠি। আগের চিঠির কোনও জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেছেন। চিঠিতে টিউলিপের তরফে বলা হয়েছে, মহম্মদ ইউনূস এবং দুদকের উদ্দেশ্য হল, তার সুনাম নষ্ট করা। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা এবং দেশ সেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এইসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রশ্ন উঠছে, এবার কি টিউলিপের করা চিঠিতে খেলা ঘুরছে বাংলাদেশে?
গত বছর ৫ ই আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে দুদক। কিছু মামলাতে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকর নামও রয়েছে। এমনকি এই ঘটনায়, টিউলিপ সিদ্দিক ও দুদকের মধ্যে বহুবার চিঠি চালাচালি হয়েছে। এদিকে টিউলিপের অভিযোগ, মহম্মদ ইউনূস বা দুদক এখনও পর্যন্ত কোনও চিঠির জবাব দেয়নি। ২৩ জুনের চিঠিতে টিউলিপ বলেছেন, গত ১৮ই মার্চ এবং ১৫ ই এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের চিঠি দিয়েছিলেন। এরপর ৪ঠা জুন একটি চিঠি পাঠানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসক। নোটিসে স্টেফেনসন হারউড বলছে, এখনও তারা বা টিউলিপ সিদ্দিক কোন চিঠির উত্তর পাইনি। অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিক একটি পরিকল্পিত প্রতারণার শিকার। যার নেপথ্যে রয়েছে, দুদক এবং মোহাম্মদ ইউনূস।
সম্প্রতি ব্রিটেন সফরে যান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তার আগেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকার একটি চিঠি দেন টিউলিপ সিদ্দিক। কিন্তু সেই সাক্ষাৎকার দেননি ইউনূস। যদিও পরে বিভিন্ন জায়গায় এটি নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। এমনকি বিদেশ থেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপ সিদ্দিকীর সঙ্গে সাক্ষাৎকার নিয়ে জবাব দিয়েছেন ইউনূস। সেটি নিয়েও সমালোচনা করা হয়েছে। তাকে টিউলিপ সিদ্দিকীর সঙ্গে সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দুদক তদন্ত চালাচ্ছে। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। তিনি হস্তক্ষেপ করতে চান না। এদিকে নোটিসে টিউলিপ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসে গিয়েছে।
দয়া করে এখন এটা নিশ্চিত করুন, যে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। এবং তিনি বলেন, যদি এই চিঠি এবং আগের চিঠিগুলোর যথাযথ উত্তর ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসঙ্গতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন। এদিকে ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান নাকি বলেন, ব্রিটেনের রাজনীতি কী এতই ভঙ্গুর যে তার দেশের একজনের নামে মামলা হল, আর তাতেই ব্রিটেনের সরকার, রাজনীতি একেবারে ধসে পড়বে, এটা কী হতে পারে!
Discussion about this post