দেশ ছেড়ে বেঁচেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর দলের নেতা মন্ত্রীদের এখন কি অবস্থা? কেউ আছেন অজ্ঞাতে কেউ বা ছেড়েছেন দেশ। কেউ বা একটি ফ্লাইটের টিকিটের অপেক্ষায় রয়েছেন। বড় বিপদের মুখে শেখ হাসিনার দলের নেতা মন্ত্রীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলন। আন্দোলনের জেরে দেশের কোটা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন। কিন্তু আন্দোলন থামল কই। গত জুলাই মাস থেকে যেন নতুন করে প্রাণ পেল আন্দোলনের মাত্রা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে, যারা গুলি চালিয়ে হত্যা করেছেন তাঁদের শাস্তি দিতে হবে সহ ৯ দফা দাবির পর একটাই দাবি উঠে এল শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। পরিস্থিতি আঁচ করে দাবি মেনে নিলেন হাসিনা। পদত্যাগ করলেন, ছাড়লেন দেশও। তবে বিপদ বাড়ল বই কমল না। নেত্রী দেশ ছাড়তেই বিপদ বেড়ে গেল আওয়ামী লিগের সদস্যদের। যাদের অনেকেই কেউ সাংসদ কেউ বা মন্ত্রী।
এখন প্রশ্ন আওয়ামী লিগের নেতারা কে কোথায়? অনেককেই ঘর ছাড়া। ফোনেও ধরা যাচ্ছে না। কেউ পরিস্থিতি আঁচ করে দেশ ছেড়েছেন আগেই। কেউবা আত্মীয় পরিজনদের বিদেশে পাঠিয়ে দিলেও নিজেরা দেশ ছাড়তে পারেননি। কেউ একটা প্লেনের টিকিট জোগারে লেগে রয়েছেন লাগাতার। কে কোথায় রয়েছেন সূত্র মারফৎ খবর থেকে একবার জেনে নেব-
- রবিবার থেকে হদিশ নেই আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের
- আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক অজ্ঞাত স্থানে চলে যান
- শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাধর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আবুল হাসান মাহমুদ আলি বিমান যোগে দেশ ছাড়েন
- গোলাম দস্তগীর গাজী, শেখ ফজলে নূর তাপস দেশ ছেড়েছেন
- ড. হাসান মাহমুদের পরিবারের সদস্যরা একে ৫৮৬ নম্বর ফ্লাইট যোগে দেশ ত্যাগ করেন
এরই মাঝে দুপুরে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে জুনাইদ আহমেদ পলককে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিকেলে এই বিমানবন্দর থেকে হাছান মাহমুদকেও আটক করা হয়। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ায় তাঁর দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন হাসিনার দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি ঘুণাক্ষরেও তাঁরা টের পাননি। তবে কোটা সংস্কার নিয়ে হাসিনার দলের মধ্যেই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তাঁর মন্ত্রিসভার এক ‘প্রভাবশালী’ সদস্যও। তাঁর দাবি, ‘‘কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর পর থেকেই সরকারের প্রধান হিসাবে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসিনা। বার বার তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। তাই এখন যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’’
বাংলাদেশের প্রাক্তন এবং প্রয়াত সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের উদাহরণ টেনে আনছেন অনেকে। তাঁরা বলেছেন, এরশাদ স্বৈরাচারী ছিলেন। কিন্তু গণ অভ্যুত্থানে যখন তাঁর সরকারের পতন হয়, তখন তিনি দেশ ছেড়ে পালাননি। সেই উদাহরণ টেনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগের নেত্রী কি ভাবে এমন করলেন? যা একেবারেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না
Discussion about this post