বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত শোচনীয়। তার থেকে বেশি ফাঁদে পড়েছেন মুহম্মুদ ইউনূস। কারণ বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ জামানের সঙ্গে বিগত একমাস ধরে দেখা সাক্ষাৎ নেই ইউনূসের। তিনি নাকি, অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ইউনূসের কার্যকলাপের উপর। বিভিন্নভাবে সেই বার্তা পৌঁছেও গিয়েছে ইউনূসের কাছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকট ইউনূসের কাছে।
২৯ ডিসেম্বর ইউনূসের প্রেস সচীব বললেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। আবারও ৩০ ডিসেম্বর তিনি জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি করবে সরকার। শেখ হাসিনার পতন এবং মুহাম্মদ ইউনূসের তদারকি সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে চরম অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। এর কারণ হিসেবে একাধিক বিষয় থাকলেও একটি বিষয় বারবার আলোচনায় আসছিল। তা হল ভারত নাকি বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক গলায়। অর্থাৎ ভারত বাংলাদেশের উপর কর্তৃত্ব ফলাতে চায়। বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের মুখে এই ধরণের বক্তব্য বারবার শোনা গিয়েছে। যেমন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বা ছাত্রনেতাদের মধ্যে যে দুজন উপদেষ্টা হয়েছেন তাঁরা বারবার ভারতকে কাঠগড়ায় তুলে এসেছেন। যদিও ভারত, তাঁদের এ হেন মন্তব্য নিয়ে কখনই কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি অথবা পাত্তা দেয়নি। এবার বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের গলায় শোনা গেল উপদেষ্টাদের ঠিক উল্টো সুর। প্রথম আলোকে দেওয়া বছরের প্রথমদিন এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ়-জ়ামান ভারত সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের জন্য ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশ অনেক বিষয়েই ভারতের উপর নির্ভর করে। আবার ভারতও কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের থেকে সুবিধা পায়। এটা একটা দেওয়া নেওয়ার সম্পর্ক।
বাংলাদেশের বহু মৌলবাদী নেতা ভারতকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন। আবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্তারাও প্রকাশ্যেই চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করার হুমকি দেন। এই প্রসঙ্গে, ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য, “বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে এমন কিছু করবে না, যা সেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থের পরিপন্থী”। সরাসরি কোনও প্রতিবেশীর নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “সীমান্তে আমাদের লোকজনকে হত্যা করবে না। আমরা প্রাপ্য জল পাব। এতে তো কোনও অসুবিধা নেই”। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ভারতকে উদ্দেশ্য করেই এই কথাগুলি বলেছেন। ভারত-বাংলাদেশের সুসম্পর্ক এবং বাণিজ্য প্রসঙ্গে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ভারতের অনেকেই বাংলাদেশে কাজ করছেন। আবার বাংলাদেশ থেকেও অনেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। ভারত থেকে পণ্যও কিনছে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার সঙ্গে ভারতের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। অর্থাৎ, সেনাপ্রধান ভারত সম্পর্কে যা বলছেন, তা মুহাম্মদ ইউনূস বা তাঁর নেতৃত্বাধিন উপদেষ্টাদের বক্তব্য নয়। অনেকে বলছেন বেশ কয়েকদিন ধরে সেনাপ্রধান এবং ইউনূসের সঙ্গে একটি ঠান্ডা লড়াই চলছে। এখন তা আরও প্রকোট হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সেনাপ্রধান বুঝে গিয়চেছে, মুহম্মুদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার যে ভাবে দেশ চালাচ্ছেন তাতে দেশের মঙ্গল হচ্ছে না। বরং দেশের শত্রু বাড়ছে। এমনকি দেশের জনগণের জন্যও তা ভালো হচ্ছে না।
Discussion about this post