বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে প্রায় ১০ মাস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও ১০ মাস বয়স। কিন্তু মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এই সরকার ব্যর্থ বলে মনে করেন দেশের বহু মানুষ। এমনকি সরকারের অন্দরে একাধিক সদস্য এই বক্তব্য রাখছেন। এমনকি মহম্মদ ইউনূস নিজেই স্বীকার করেছেন। অনেকে বলেছিলেন, ইউনূস সরকারের পতন ঘটলে, তিনি দেশে ছেড়ে পালাবেন। এবার কি সেটাই তিনি নিজে মুখে স্বীকার করে নিলেন? বাংলাদেশের মানুষ নাকি ইউনূসের সরকারকে শত্রু মনে করে। এমনই স্বীকারোক্তি দিলেন মহম্মদ ইউনূস।
গত ১২ই জুন ব্রিটিশ দৈনিক দ্যা গার্ডিয়ানকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রথম শর্ত, দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন। সরকারের প্রতিটি স্তরে এবং প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত দুর্নীতির শিখর ছড়িয়ে রয়েছে। এবং তিনি আরও সংযোজন করে বলেন, পাসপোর্ট বানাতে এবং ব্যবসার লাইসেন্স নিতে সমস্ত জায়গায় ঘুষ দিতে হয়। প্রত্যেকটি স্তরেই লুটপাট চলে। সরকারকে নাকি মানুষ শত্রু ভাবে। তিনি একরকম স্বীকার করেই নিলে, যে সেখানেই ঘুষের রাজত্ব চলছে। অন্যদিকে তিনি আবার ঘুরিয়ে বলার চেস্টা করলেন, শেখ হাসিনার আমল থেকেই দুর্নীতির শিখর ছড়িয়ে ছিল। তিনি আর একটি কথা বলেছেন, সেটা হল, প্রত্যেকটি স্তরে নাকি লুটপাট চলে। কিন্তু তার আমলে যে মব জাস্টিস চলছে, সেটা কি তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন? আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব থেকে ভয়ংকর কথা ছিল তার, সেটি হল, সরকারকে মানুষ শত্রু ভাবে। অনেকে বলছেন, নিজের মুখে হয়তো স্বীকার করে ফেললেন মোঃ ইউনূস, সে তার সরকার সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেনি। আর সেই কারণেই শত্রু ভাবে।
এমনকি তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই আন্দোলন শুরু হলেও, এই বিদ্রোহের পিছনে ছিল, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, এক নায়ক তন্ত্রের প্রভাব, কর্মসংস্থানের অভাব। এখানেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হাসিনার আমলের বিরুদ্ধে যে যে অভিযোগগুলো ইউনূস করতে চেয়েছেন, সেগুলিকে ইউনূসের আমলে কমেছে? তিনি কি লাগাম টানতে পেরেছেন? পাশাপাশি ভারত বিরোধীতা বাড়িয়েছে। সেটাতেও বিপদে পড়েছে ইউনুসের শাসনকাল। এর জন্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশে। ভারত থেকে যে পণ্য সস্তায় আসতো, এখন সেগুলি ঘুরপথে অন্য দেশ থেকে আসায় তার দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশের শতাধিক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে খবর। এমনকি শেখ হাসিনার আমলে যেভাবে দেশের উত্থান ঘটেছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ইউনুসের আমলে সেটা অবনতির দিকে গিয়েছে।
এছাড়াও তিনি জুলাই সনদের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে ঐতিহাসিক চুক্তি করতে চান। যাতে নির্বাচনে পথ সুগম হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কিসের জুলাই সনদ? আসলে তো এটি একটি পরিকল্পনা মাফিক গণঅভ্যুত্থান। বাইরের দেশে এতে সাহায্য করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, নির্বাচন গড়িমসি করে অনির্বাচিত সরকারের প্রধান হয়ে থাকতে চাইছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি ইউনূসের পতন ঘটবে, বলছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
Discussion about this post