ব্রিটেন সফর শেষ করে বাংলাদেশ ফিরেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি নানাভাবে অপমানিত হয়েছেন। এরমধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার দেখা করেননি ইউনূসের সঙ্গে। এই বিষয়টি নিয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। সেখানেই প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে দেখা হল না? উত্তরে ইউনূস জানান, সাক্ষাৎ হলে ভালো হত। এর পাশাপাশি তিনি আশা নিয়ে জানান, এটি আমার জন্য একটি সুন্দর সুযোগ এনে দিয়েছে। এখন তিনি ব্যস্ত রয়েছেন, আমি তাকে বাংলাদেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তখন আমাদের হাতে সময় থাকবে। আমরা কি করতে চাইছি, সেটি দেখাতে পারবো। তিনি পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন, এবং আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ব্রিটেনে প্রায় ১০ লক্ষ বাংলাদেশী রয়েছে। তিনি বেশ কয়েকদিন লন্ডনে থাকার পরও কিয়ের স্টারমার দেখা করলেন না, এটা তাকে কতটা হতাশ করেছে? ইউনূস জানান, তার হতাশ হওয়া উচিত কিনা সেটা তিনি জানেন না। তারপর তিনি বলেন, সেই জন্যই আমি বলছি, বাংলাদেশে তার আসাটা একটি দারুন সুযোগ। ধীরে সুস্থে বাংলাদেশকে দেখার, এবং এই দেশকে উপলব্ধি করার। এবং উপলব্ধি করার একটি ভালো সুযোগ হতে পারে যে, বাংলাদেশ কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা জানান, এখন তিনি সম্ভবত গুরুত্বপুর্ণ কোনও বিষয়ে ব্যস্ত। অর্থাৎ তারা সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না হওয়াতে অন্য ব্যাখ্যা দিতে চাইছেন নোবেল জয়ী। পাশাপাশি বিতর্ক কমাতে মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।
প্রসঙ্গত, মহম্মদ ইউনূস লন্ডন পৌঁছতে সেখানে চরম অপমানজনক পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন বলে খবর। তাকে স্বাগত জানাতে প্রশাসনের তরফে কেউ আসেনি বলে খবর। এমনকি হোটেল থেকে বের হতে পারছিলেন না বলে খবর। অন্তত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি থেকে সেটা স্পষ্ট নজরে এসেছিল। একদিকে ইউনূসের বিরুদ্ধে পোস্টার লক্ষ্য করা যাচ্ছিল, অন্যদিকে হাসিনার পক্ষে পোস্টার নজরে এসেছিল। পাশাপাশি হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর মুক্তির দাবিতে ফেস্টুন দেখা গিয়েছিল। খবর পাওয়া যাচ্ছে, প্রধান উপদেষ্টা যে হোটেলে রয়েছেন, সেখানে শত শত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তারা। এছাড়াও লন্ডনের বিভিন্ন জায়গাতে পপ প্রতিবাদ বিক্ষিপ্তকারে লক্ষ্য করা গিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের আগেই মনে করা হচ্ছিল, তিনি বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন। তার কারণ বাংলাদেশের বাইরে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সমর্থক ও নেতা রয়েছেন লন্ডনে। আর সেখানেই আওয়ামী লীগের প্রতিরোধের মুখেই পড়লেন তিনি। তারা এককাট্টা হয়ে এই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে বলে খবর। অর্থাৎ বিদেশের মাটিতে হাসিনার মাস্টারপ্ল্যান। এমনকি ইউনূসকে টেরোরিস্ট বলছেন কিছু মানুষ। যেটা এর আগে বাংলাদেশের কোনও রাষ্ট্রপ্রধানকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। ফলে একটি বিভ্রান্তিকর এবং অস্বস্তিজনক ভাবেই তার লন্ডন সফর হয়েছে বলে দাবি অনেকের।
Discussion about this post