হাইকোর্টের নির্দেশের পর প্রাথমিক নিয়োগে ওএমআর দুর্নীতি খুঁজতে পুরোদস্তুর অভিযানে নেমেছে সিবিআই। পরপর চার দিন এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির অফিসে তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। মঙ্গলবার থেকে একেবারে টানা চারদিন। প্রাথমিকের উধাও ওএমআর শিটের খোঁজ পেতে কার্যত নাওয়া খাওয়া ভুলে সার্দান অ্যাভিনিউয়ের এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির অফিসে তল্লাশি চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।বৃহস্পতিবারই সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন দু’জন সাইবার বিশেষজ্ঞ। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পাঁচ সদস্যের সিবিআই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অফিসে ঢোকেন তিনজন সাইবার বিশেষজ্ঞ। ইতিমধ্যেই একাধিক সার্ভার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন প্রচুর তথ্য সার্ভার থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি তদন্তের শেষ দেখতে সেইসব তথ্যই পুনরুদ্ধার করতে চায় সিবিআই। প্রাথমিকের ওএমআর শিট বানানোর দায়িত্বে ছিল এই এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি। অফিসের কোনও কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কে ওএমআর শিটের হার্ড কপি রয়েছে কি না, তাই মূলত খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল ওএমআর শিট ও সার্ভার দুর্নীতির শেষ দেখতে তাঁদের অলআউট ঝাঁপাতে হবে। এরপরই কার্যত আরও তৎপরতা দেখাতে শুরু করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালে প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযোগ, ওএমআর শিটের নম্বর বদলে বহু অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীকে চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, এই মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে আদালতে আগেই জানানো হয়েছিল যে, ওএমআর শিটের হার্ডডিস্ক তাঁদের কাছে নেই। শুধুমাত্র ডিজিটাইজড তথ্য রয়েছে। সেই সময় সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছিলেন, “হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করার আগেই ওএমআর শিটের আসল তথ্য নষ্ট করা হয়েছে। ফলে আমরা ডিজিটাইজ়ড তথ্য পেয়েছি। যা সহজেই পরিবর্তন করা যায়।” এরপরই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, “মেটাডেটা কখনওই মুছে ফেলা সম্ভব নয়। হার্ড ডিস্ক নষ্ট হলেও সার্ভারে অরিজিনাল ডেটা থাকবেই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তা দিতে ব্যর্থ হলে বলতে হবে, তদন্ত ভুল পথে চলছে।”
Discussion about this post