তৈরি হয়েছিল মঞ্চ। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। নবান্নে পৌঁছে গিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের দল। তবুও হল না কাঙ্খিত বৈঠক। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী দুই ঘণ্টার বেশি বসে থাকলেন অপেক্ষা। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের একটি দাবিতে অনড়, রাজ্য সরকারও তা মানতে রাজি নয়। ফলে শেষ পর্যন্ত ভেস্তেই গেল বৈঠক। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানালেন, তিনি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। কিন্তু কেউ কেউ বিচার চান না। চান ক্ষমতার চেয়ার।
বুধবার থেকেই ইমেল-পাল্টা ইমেল চালাচালি চলেছে। শর্ত পাল্টা শর্তে বৈঠক হওয়া নিয়ে চলছিল টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধর্ণামঞ্চ থেকে একটি বাসে চেপে নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা হন ৩০ জনের এক প্রতিনিধি দল। অপরদিকে নবান্ন সভাঘরে তখন উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ সমস্ত উচ্চপদস্থ আমলা। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার এই দাবি মানতে নারাজ। ফলে শেষ পর্যন্ত আর বৈঠকই হল না।
পরে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘তিন দিনেও সমাধান করতে পারলাম না। বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। যাঁরা নবান্নের সামনে এসেও বৈঠকে এলেন না, তাঁদের আমি ক্ষমা করলাম। আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমার সরকারকে অসম্মান করা হয়েছে। অনেক ভুল বোঝাবুঝি, কুৎসা হয়েছে। সাধারণ মানুষ রঙ বোঝেনি। আমি পদত্যাগ করতে রাজি আছি। কিন্তু ওরা বিচার চায় না। চেয়ার চায়। আশা করি মানুষ সেটা বুঝবেন।’ তিনি আরও বলেন, আমি মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতেও রাজি। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার আমার চাই না। কিন্তু তিলোত্তমা বিচার পাক।
এই মুহুর্তে রাজ্য প্রশাসনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হল জুনিয়র ডাক্তারদের যে কোনও মূল্যে কর্মবিরতি থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা। কিন্তু সেই কাজটাই যে এত কঠিন হবে সেটা সম্ভবত বুঝতেই পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টও রাজ্য সরকারের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করতেই হবে। না হলে রাজ্য প্রশাসন যদি কড়া ব্যবস্থা গ্রহন করে তাহলে আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। এরপরই রাজ্য সরকার জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে বসার আবেদন করে মেল পাঠায়। পাশাপাশি কতজন জুনিয়র ডাক্তার কাজে যোগ দিয়েছেন সেটাও খোঁজ খবর নিতে নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্যভবন। কিন্তু এদিন বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁরা নবান্নের সামনে এসেও বৈঠকে এলেন না, তাঁদের আমি ক্ষমা করলাম।
Discussion about this post