আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা নিয়ে উত্তাল বাংলা। এই আবহেই এবারের দুর্গাপুজো হল। প্রথমে দাবি উঠেছিল উৎসবে সামিল না হওয়ার। পরে আন্দোলনকারীদের তরফে জানানো হয়, প্রতিবাদও চলুক, উৎসবও চলুক। সবমিলিয়ে এবারের দুর্গাপুজো অন্য সব বারের থেকে আলাদা ছিল। কারণ, মহালয়া পর্যন্ত পুজোর সে রকম রেশ না পাওয়া গেলেও মহালয়ার পর থেকেই কলকাতার রাস্তায় জনজোয়ার দেখা গিয়েছে যথারীতি। আর এর প্রভাব পড়েছে কলকাতা মেট্রো রেল এবং পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনে।
এবারের পুজোয় কলকাতা মেট্রোর ব্লু এবং গ্রীন লাইনে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে ১.৭ শতাংশের বেশি। মেট্রো রেলের প্রতিটি শাখায় যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। কলকাতা মেট্রোর দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ব্লু লাইন এবং গ্রিন লাইন ১ এহং ২ মিলিয়ে ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ যাতায়াত করেছে। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর রুটে কমপক্ষে ৪৪ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেছেন। পাশাপাশি গ্রিন লাইন ১ এহং ২ মিলিয়ে ৬ লক্ষের বেশি মানুষ যাতায়াত করেছেন পুজোর চারদিন। উল্লেখ্য, অন্যান্য বারের মতোই এবারও দুর্গাপুজোয় অতিরিক্ত মেট্রো চালিয়েছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। এবারের পুজোয় রেকর্ড ভিড় টেনেছে ব্লু লাইনের দমদম, শোভাবাজার এবং কালীঘাট মেট্রো স্টেশন।
অপরদিকে পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনও লক্ষ্ণীলাভ করেছে এবারের পুজোয়। কারণ, দুর্গাপুজোর কয়েকদিনে শিয়ালদা ডিভিশনে প্রায় ১ কোটি মানুষ লোকাল ট্রেনে চড়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। পূর্ব রেলের হিসেব অনুযায়ী, এবারের পুজোয় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ লক্ষ যাত্রী লোকাল ট্রেনে চড়েছেন। সেই হিসেবে পুজোর কয়েকটা দিনে শিয়ালদা ডিভিশনে ১ কোটির বেশি যাত্রী যাতায়াত করেছেন। পূর্ব রেলের তথ্য অনুযায়ী গত বছর পুজোর সময় যাত্রী সংখ্যা ছুঁয়েছিল প্রায় ৯৬ লক্ষ। এবার সেই সংখ্যাও ছাপিয়ে গেল। দেখা যাচ্ছে, যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫.১৬ শতাংশ। এবার পুজোর সময় যাতে দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে দর্শনার্থীরা কলকাতায় ঠাকুর দেখতে আসতে পারেন সেই কারণে পূর্ব রেল গভীর রাতেও বিশেষ ট্রেন চালায়। এর ফলে বহু মানুষ নির্ভয়ে কলকাতায় যেমন ঠাকুর দেখতে এসেছেন, তেমনই অনেকে বিভিন্ন ধর্ণামঞ্চ বা আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে উপস্থিত থাকতে পেরেছে।
Discussion about this post