আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় সঞ্জয় রায় নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সূত্রের খবর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তরুণীর মুখ, পেট, গলা, ঠোঁট, এমনকি যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে আর জি করে শুরু হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন। আরজি করের ঘটনার প্রভাব পড়েছে শহরের অন্য সরকারি হাসপাতালগুলিতেও।
চিকিৎসকদের নিরাপত্তা কোথায়? আপাতত এই প্রশ্ন ঘিরে তোলপাড় শহরের সরকারি হাসপাতালগুলি। বিক্ষোভ, মিছিল। জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ডাক। শুক্রবার সকালে আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে মিলেছে এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ। ইতিমধ্যেই খুন ও ধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তরুণীর মুখ, পেট, গলা, ঠোঁট, এমনকি যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। শুক্রবার রাতেই তরুণীর দেহ এসে পৌঁছায় সোদপুরের নাটাগড়ের বাড়িতে। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ভিড় করেন তরুণীর বাড়ির সামনে। প্রায় ১ ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল শববাহী শকট। মৃতার অভিভাবকরা হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এসে না পৌঁছানোয় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। ক্ষোভ বাড়ে পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে।
একধারে পুলিশ, অন্যদিকে পাড়ার প্রতিবেশীদের ভিড়। অনেকেই বাইরে থেকে ছুটে এসেছেন তরুণীকে একটিবারের জন্য দেখার জন্য। প্রত্যেকেই গুণমুগ্ধ তরুণী চিকিৎসকের। কেউ ভাবতেই পাচ্ছেন না সরকারি হাসপাতালে এমন কাণ্ড ঘটতে পারে।
দোষীরা অবশ্যই শাস্তি পাবেন। বললেন পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ। শুক্রবার রাতেই তরুণীর বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন নির্মল।
আগের দিন রাতেই তরুণীর সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর বাবা-মায়ের। মেয়েকে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তরুণীর বাবা-মা জানাচ্ছেন সেই কথাই। হিংসার বলিও হতে পারেন তরুণী। এমন সম্ভবনার কথাও তুলে ধরছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা।
কোন ঝামেলার মধ্যেই থাকতেন না তরুণী। জানাচ্ছেন মৃতার বাবা। পুলিশ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রাথমিকস্তরে ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রেখেছে তরুণীর পরিবার
আরজি করের ঘটনার প্রভাব পড়েছে শহরের অন্য সরকারি হাসপাতালগুলিতেও। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইতিমধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। শহর থেকে মফস্বল, ক্রমশই আন্দোলনের পারদ চড়ছে। একটি সরকারি হাসপাতালে কি করে এমন সম্ভব? কর্তব্যরত চিকিৎসকের মর্মান্তিক পরিণতিতে হতভম্ব সকলেই। বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের এখন দুটোই দাবি। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে। এদিন হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিল ফরেন্সিক টিম ও চার সদস্যের রাজ্য মহিলা কমিশনের টিম
নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছে যান ডিসি নর্থ অভিষেক গুপ্তা। ডান থেকে বাম সকলেই এই ঘটনায় সরব হয়েছে। DYFI এর সাধারণ সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন যে হাসপাতালের ঘটনা সেখানে কি ভাবে পোস্ট মর্টেম? অন্যদিকে বিজেপি প্রতিনিধিরা দ্বিতীয়বার পোস্ট মর্টেমের দাবি জানিয়ে ছিলেন
বিক্ষোভ, বিরোধীদের বিচার চাওয়া সবই তো হল। যে মায়ের বুক খালি হল, সেই হতভাগ্য বাবা-মা তাঁদের একমাত্র সন্তানকে হারানোর যন্ত্রণা কোনদিন কি ভুলতে পারবেন? ফ্ল্যাশ লাইটের বাইরে গিয়ে তাঁদের যন্ত্রণার কথা কেউ কি শুনবে কোনদিন? আজ থেকে তাঁদের ছায়াসঙ্গী কেবল একজনই, মেয়ে হারানোর শূণ্যতা
Discussion about this post