লাটে উঠবে রাজ্যের অর্থনীতি! গোটা ভারতে একসময় যে রাজ্য অর্থনৈতিক পরিসরে উপরের তালিকায় ছিল, আজ সেই রাজ্যের অর্থনীতি নিম্নমুখী। বিশ্লেষকদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ, বর্তমানে এই রাজ্যের যুবসমাজ কাজের অভাবে অবসাদে ভুগতে শুরু করেছে। চারিদিকে দুর্নীতি, আবার রাজ্য সরকারেরই কর্মচারীদের ডিএ প্রদানে ব্যর্থ সেই সরকার। সে কারণেই সম্প্রতি আদালতের তরফে ৫০ শতাংশ ডিএ প্রদানের রায়ে, রাজ্যের স্বীকারোক্তি এই পরিমাণ ডিএ প্রদান করা হলে রাজ্যের কোষাগারে টান পড়বে!
আর পরপর এই ঘটনাগুলি নিয়ে বিরোধীরাও সুর চড়িয়েছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে, এ ঘটনা গুলি নিয়ে রাজশাহীর বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী তিনি কি বলছেন শুনুন,,
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে একের পর এক যে ঘটনাগুলি ঘটে চলেছে সেখানে একটা প্রশ্ন বারবার উঠছে বিশেষজ্ঞ মহলে, তবে কি এই রাজ্যের অর্থনীতিএকেবারেই ঢুবতে বসেছে? কি চাইছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী? বিভিন্ন মহলে এই প্রশ্ন ওঠার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, প্রতিনিয়ত যেভাবে এক একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে তাতে এটাই প্রমাণিত হয় যে ভবিষ্যতে ভারতের ২৮ টি রাজ্যের মধ্যে এই পশ্চিমবঙ্গ দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থায় সবার উপরের তালিকায় থাকবে, তার মানে ইঙ্গিত বারে বারে পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়াও ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী যে কাজ গুলি করে যাচ্ছেন তাতে পরবর্তী বেশকিছু বছর সাধারণ মানুষ যার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেনা তা স্পষ্ট হচ্ছে বলেই দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কিন্তু এখন প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে কেন এই ধরনের দাবি করা হচ্ছে? এর উত্তরে বলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন তার মধ্যে প্রথমত বাম আমল থেকে তৃণমূল আমল পর্যন্ত শিল্পের স্বার্থে যে উৎসাহ ভাতা বা ছার শিল্পপতিদের দেওয়া হতো সেই উৎসাহ ভাতা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল বৃহত্তর জন স্বার্থের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। অর্থাৎ সারাদেশে বিভিন্ন রাজ্য যেখানে নিজেদের শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে শিল্পপতিদের উৎসাহ ধরে রাখতে ভাতা প্রদান করছে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ এতদিন পর্যন্ত শিল্পপতিদের যতটুকু ভাতা দেওয়া হতো সেইটুকুও প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
এবার সরকারের তরফ থেকে যে বৃহত্তর জনস্বার্থে কথা বলা হয়েছে সে জনস্বার্থটি প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে রাজ্য এর বিভিন্ন প্রকল্প, অর্থাৎ তার মধ্যে অন্যতম লক্ষ্মী ভান্ডার চালু রাখা। অর্থাৎ বিশ্লেষকরা দাবি করছেন শাসক থেকে বিরোধী সকলের পাখির চোখ, ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে শাসকদলকে তাদের এই জনমুখী প্রকল্পগুলিকে ধরে রাখতে হবে এবং লক্ষী ভান্ডার এর অনুদান দরকার পড়লে বৃদ্ধি করবে রাজ্য সরকার। শুধু ঘোষণাই নয় সেটি বাস্তবায়িত করতে হবে তবে যদি নিজের জায়গা কিছুটা শক্ত করা যায় রাজ্য সরকারের আর সেই পদক্ষেপেই গ্রহণ করেছে রাজ্য প্রশাসন। আর এই প্রকল্পের টাকা বৃদ্ধি করতে হলে এবং এই প্রকল্প চালু রাখতে হলে রাজ্যের কোষাগারে টান পড়তে দেওয়া যাবে না। আর কোষাকার ভরাতে পরিকল্পনা করা হল রাজ্যের শিল্পায়নের স্বার্থে যে উৎসাহ ভাতা দেওয়া হয় তা প্রত্যাহার করা হবে।
আর এবার,রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ শীর্ষ আদালতের । রাজ্য সরকারী কর্মীদের স্বস্তির নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার DA মামলায় অবশেষে খুব অল্প সময়ের জন্যই শুনানি হয়। তার মধ্যে প্রথমে আদালত রাজ্যকে বলে, ৫০ শতাংশ বকেয়া মহার্ঘভাতা দিতে হবে। কিন্তু তারপর রাজ্যের অনুনয়েই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেন, বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ এখনই দিতে হবে।
এ দিন অন্তর্বর্তী নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলে দিয়েছে, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার। এবং পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় থাকা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ এর ২৫ শতাংশ তিন মাস অর্থাৎ আগস্টের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্যকে।
তবে প্রথমেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার ৫০ শতাংশ রাজ্যকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ায়, আদালতে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, এটা বিপুল অঙ্কের টাকা। এখনই বকেয়া মহার্ঘভাতার ৫০ শতাংশ দিতে হলে রাজ্যের কোমর ভেঙে যাবে। তাছা়ড়া তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, মহার্ঘভাতা কোনও সাংবিধানিক অধিকার নয়, এখনই বকেয়া ডিএ-র ৫০ শতাংশ দেওয়া অসম্ভব । এরপর শীর্ষ আদালত জানায়, এখনই বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে হবে। এরা আপনাদের কর্মী, ফলে অসুবিধার কোনও কারণ নেই, জানান বিচারপতি সঞ্জয় কারোল।
প্রসঙ্গত,বর্তমানে রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা ১৮ শতাংশ ডিএ পান৷ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বর্তমান ডিএ-র হার ৫৫ শতাংশ। গত অর্থবছরে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র হার ছিল ১৪ শতাংশ। এরপর নতুন অর্থবছর থেকে ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন সুপ্রিম রায়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ দিতে রাজ্য প্রশাসনকে আবার কোন নতুন পরিকল্পনা শুরু করতে হয়, এখন সেটাই দেখার।
Discussion about this post