পাখির চোখ ২০২৬, বিধানসভা নির্বাচন। এখনও হাতে সময় প্রায় ১ বছর। সাধারণ মানুষের দুয়ারে পৌঁছনোর আগে সাংগঠনিক রদ বদল করল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার জেলা সভাপতি এবং জেলা চেয়ারম্যান পদে বদল আনল রাজ্যের শাসক দল। উল্লেখযোগ্য ভাবে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষমতা হ্রাস করে দিল মমতার দল। যা নিয়ে প্রবল শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক আঙিনায়।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক জেলা ৩৫টি। তার মধ্যে ১১ জন জেলা সভাপতি এবং ১২ জন জেলা চেয়ারম্যানকে বদল করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকের কার্যকলাপ এবং পারফরম্যান্স দেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০২৪ এর ২১ শে জুলাই এর মঞ্চ থেকেই দলের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, সাংগঠনিক রদবদল হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের। তারপর থেকেই দলের অন্দরে নানা জল্পনা আলোচনা তৈরি হতে থাকে। শোনা যায়, দলের সেকেন্ড ও কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি তালিকা তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। তারপরই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তবে বারাসাত এবং দার্জিলিং সাংগঠনিক জেলায় নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়নি। অন্যদিকে বীরভূম সংগঠনিক জেলার সভাপতি ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেখান থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় কাজ করবে ৯ সদস্যের কোরকামিটি। সেই নয় সদস্যের মধ্যে অবশ্য রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, চন্দ্রনাথ সিনহা, অভিজিৎ সিংহ, শতাব্দি রায়, অসিত মাল, কাজল শেখ, সুদীপ্ত ঘোষ।
বীরভূম জেলার মতোই উত্তর কলকাতার সংগঠনিক পদে কোন সভাপতি রাখেননি তৃণমূল নেত্রী। যদিও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন চেয়ারম্যান পদে। সেখানেও রয়েছে ৯ সদস্যের কোর কমিটি। তাদের মধ্যে রয়েছেন, শশী পাজা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, অতীন ঘোষ, পরেশ পাল, স্বপন সমাদ্দার, সুপ্তি পান্ডে, স্বর্ণ কমল সাহা এবং জীবন সাহা দেখবেন উত্তর কলকাতার তৃণমূলের সংগঠন। অন্যদিকে দমদম ব্যারাকপুর সংগঠনিক জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পার্থ ভৌমিকের হাতে। যেখানে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন নির্মল ঘোষ। এছাড়াও হাওড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর, তমলুক, উত্তর দিনাজপুর, বনগাঁ .. এই সমস্ত জায়গাতেও তৃণমূল সাংগঠনিক স্তরে রদবদল ঘটিয়েছে। সব থেকে বেশি চর্চায় উঠে এসেছে, বীরভূম এবং উত্তর কলকাতা নিয়ে। যেখানে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হয়ে যাবার পরও তিনি সভাপতি পদে বহাল ছিলেন, সেখানে কোর কমিটির হাতেই সংগঠনিক দায়িত্ব তুলে দেওয়া, রাজনৈতিক আঙিনায় জল্পনা সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে উত্তর কলকাতাতেও একাধিক সমস্যার সামনে এসেছে। আর সেখানেও দলের তরফে কোর কমিটি গঠন করে দেওয়া নিয়ে না নানা আলোচনা চলছে।
এবারের বিধানসভা নির্বাচন অনেকটাই তৃণমূলের কাছে কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। একদিকে যেমন আরজিকর কান্ড অন্যদিকে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়া, ফলে কংগ্রেসকে অনেকটাই ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আটঘাট বেঁধে এবারে বিধানসভা নির্বাচন লড়তে উদ্যত হচ্ছেন তা বলাই বাহুল্য।
Discussion about this post