টেন্ডার পাইয়ে দিতে কত টাকা পাচ্ছেন? নবান্নে বৈঠক শেষে প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। পুরসভার কাজে প্রকাশ্যে অসন্তোষ তৃণমূল সুপ্রিমোর। গত লোকসভা ভোটে পুরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফল ভালো হয়নি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের। অনেক ওয়ার্ডে দলের তাবড় নেতা বাসিন্দা অথবা কাউন্সিলর হওয়া সত্ত্বেও পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। রাজ্যে লোকসভার ৪২ টি আসনের মধ্যে ২৯ টি আসনে জিতেছে তৃণমূল। তারপরেও আশঙ্কার মেঘ কাটছে না। সামনে বিধানসভা ভোট। হাতে মাত্র দেড় বছর। তড়িঘড়ি নিজেদের গলদগুলি বিশ্লেষণ করে ক্ষত মেরামতির চেষ্টায় রাজ্যের শাসকদল। গতকাল নবান্নে পুরপ্রধানদের নিয়ে বৈঠক সারেন মমতা। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সন্মেলনে চাঁচাছোলাভাবে দলের নেতাদের আক্রমণ করেন নেত্রী। পুর পরিষেবায় যে তিনি একেবারেই নাখুশ প্রতিটি কথা বুঝিয়ে দিলেন মমতা।
পুর পরিষেবায় কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন নেত্রী। বিধায়ক থেকে SDO কেউ বাদ গেলেন না মুখ্যমন্ত্রীর নিশানা থেকে। নাম ধরে ধরে আক্রমণ শানালেন তিনি। প্রশাসনের একাংশ যে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট। সরকারি জমি দখলদারি, পুকুর বুজিয়ে বিল্ডিং রাজ্যের আনাচে কানাচে হামেশাই দেখা যাচ্ছে। কাদের মদতে এই একচ্ছত্র অধিকার প্রয়োগ চলছে? প্রশ্ন তুললেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন যে স্বচ্ছতা হারিয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান খোলাখুলিভাবে বুঝিয়ে দিলেন। ভোটের আগে পথশ্রী প্রকল্পে তৈরি হওয়া রাস্তার বেহাল দশা সামনে এসেছিল। রাস্তা, জল, আলো নিয়ে দলের প্রার্থীরা ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছিল কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হওয়া রাস্তার এমন হাল হয় কি ভাবে। সুযোগ বুঝে বিরোধীরা কাটমানির অস্ত্রে শান দিয়েছিলেন।
ভিও- রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। মন্ত্রীর নাম তুলেও কথা বলতে ছাড়লেন না মমতা। সুজিত বসু বাইরের লোক নিয়ে এসে বসাচ্ছেন সল্টলেক-রাজারহাটে। রীতিমত প্রতিযোগিতা করে। স্বাভাবিকভাবে মমতার এমন রনংদেহী মূর্তি দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন কেন আচমকা ক্ষেপে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধুই কি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন? বলাবাহুল্য গতবছর নবজোয়ার যাত্রায় বেড়িয়ে অভিষেক ব্যানার্জি মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা সামনে থেকে শুনেছিলেন। সূত্রের খবর ভোট মিটতেই কিছু আমলা-মন্ত্রীদের গাছাড়া কাজ নিয়ে দলের অন্দরে সরব হয়েছিলেন। বার বার লক্ষ্মী ভাণ্ডারের মত প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখে যে ভোট বৈতরণী পার করা যাবে না। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা ভোটে ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফল আগাম হুঁশিয়ারি হিসেবে কাজ করেছে। তার প্রতিফলনই সামনে এল মুখ্যমন্ত্রীর সুরে।
Discussion about this post