এমন নজির আগে বাংলায় কোনওদিন হয়েছে কি না সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে এবার একেবারে খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মানহানির মামলা করলেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আজ কলকাতা হাইকোর্টে তার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে এই মামলাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বাংলা জুড়ে শোরগোল পড়়ে গিয়েছে। তবে মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে এনিয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দেন রাজ্যপাল। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে পারেন রাজ্যপাল। এনিয়ে আগেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু তারপরে এবার একেবারে মামলা করেই ফেললেন রাজ্যপাল। হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে মামলা দায়ের হয়। ‘কেউ আমার আত্মমর্যাদায় আঘাত হানার চেষ্টা করলে ফল ভুগতে হবে’, প্রতিক্রিয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের।
রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বুধবার আদালতে বলেন, রাজ্যপালকে জড়িয়ে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা একাধিক মন্তব্যে সিভি আনন্দ বোসের মানহানি হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে একাধিক সংবাদপত্রের এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং ভিডিও ফুটেজ আদালতে হাজির করেন তিনি। এরপরই আদালত জানতে চায়, যে সব সংবাদমাধ্যমের থেকে আবেদনকারী এই খবর পেয়েছেন মামলায় সেই সব সংবাদমাধ্যমকে পার্টি করা হয়েছে কিনা। জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে তা ইউটিউবে রয়েছে, যে কেউ সেটা দেখতে পারেন, শুনতে পারেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে রাজ্যপালের ওএসডি-সহ তিন জনকে ১৬০-এ নোটিশ দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল।
শিলিগুড়িতে সাংবাদিকদের রাজ্যপাল জানান, মুখ্যমন্ত্রী এখন একজন অভিযুক্ত। আমি তাঁকে অভিযুক্ত হিসাবেই এবার থেকে দেখব। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক থাকবে। তিনি আমার সাংবিধানিক সহকর্মী। সেইমতো তাঁকে আমি গণ্য করব। কিন্তু আমার আত্মসম্মানে আঘাত লাগলে আমি ছেড়ে কথা বলব না। তাঁর বিরুদ্ধে আমি মানহানির মামলা করেছি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নবান্নে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। উপনির্বাচনে জয়ী দুই তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে শপথগ্রহণ করতে চান না। বরং বিধানসভায় তাঁরা শপথগ্রহণ করতে চান। এ প্রসঙ্গে গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজভবনে মহিলারা যেতে ভয় পাচ্ছেন। এরপরই ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রের খবর, কলকাতা হাইকোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন যে, জনপ্রতিনিধিদের এমন বিভ্রান্তিমূলক এবং মিথ্যা অপবাদ দেওয়া উচিত নয়।
Discussion about this post