পূর্বাভাস মেনেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়ে গিয়েছে ঘুর্ণিঝড় ডানা। বুধবার সকালেই গভীর সমুদ্রে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঘুর্ণিঝড় ডানার ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা কম। সেটি ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব পড়তে পারে। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, উপগ্রহ চিত্র এবং ঘূর্ণিঝড়টির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে অনুমান করা হচ্ছে সেটির ল্যান্ডফল হতে পারে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা এলাকার মধ্যবর্তী এলাকায়।
দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, বিগত ৬-৭ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় ডানা সমুদ্রের বুকে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগোচ্ছে। এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় ডানার অবস্থান, ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। আবহবিদদের অনুমান, ২৪ অক্টোবর রাত থেকে এটি শক্তিবৃদ্ধি করে ভোররাতের মধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এবং ২৫ তারিখ ভোর থেকে সকালের মধ্যেই ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা এলাকার মধ্যবর্তী কোনও স্থানে ল্যান্ডফল করবে। সেই সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
দি্ল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, ওড়িশার জগৎসিংহপুর, কেন্দাপাড়া, ভদ্রক এবং বালেশ্বর জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, ময়ূরভঞ্জ, পুরী, ভুবনেশ্বর, কটক, সম্বলপুর জেলায় অপেক্ষাকৃত কম প্রভাব পড়বে। বুধবার থেকেই এই সমস্ত এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। বৃহস্পতিবার এই বৃষ্টির পরিমান বাড়বে, সেই সঙ্গে চলবে ঝোড়ো হাওয়া। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, কটক, ভদ্রক, পূরী, ভূবণেশ্বর, সম্বলপুর ও বালাসোর জেলায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। ওড়িশা সরকারের অনুরোধে ২০০টির বেশি ট্রেন বাতিল করেছে রেল মন্ত্রক। এছাড়াও গোটা ওড়িশাকেই হাই এলার্টে রাখা হয়েছে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকল কর্মী ও আধিকারিকদের ছুটি বাতিল। তিন দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। দুর্গত এলাকাগুলি থেকে প্রত্যেককে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওড়িশার বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে ২৮৮টির বেশি উদ্ধারকারী দল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওড়িশার ছয় জেলায় অভিজ্ঞ আইপিএস ও আইএএস আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করার জন্য।
Discussion about this post