কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে দায়ের করা হল FIR। রবিবার মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার বিরুদ্ধে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করল দিল্লি পুলিশ। ফলে নতুন করে বিপদে পড়লেন তৃণমূল সাংসদ।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ঘটে গিয়েছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হাথরাসে একটি ধর্মীয় সভায় যোগ দিয়ে মারা গিয়েছেন ১২১ জন। জখম হয়েছেন বহু। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্ট হয়ে আহত মহিলাদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। একটি ভিডিওতে দেখা যায় কোন একজন রেখার মাথায় ছাতা ধরে রয়েছেন। এই ছবি দেখে সরব হয় নেটপাড়া। ঠোঁটকাটা মহুয়াও চুপ করে থাকেননি। রেখার ছাতা না ধরার কারণ খুঁজে নিয়ে ছিলেন মহুয়া। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মন্তব্য করেন, ‘ছাতা ধরবেন কী করে, উনি তো ওঁর প্রভুর পাজামা ধরেছিলেন।‘ প্রতিবাদ করেছিলেন রেখা। সঙ্গে সঙ্গে এই মন্তব্যকে অশালীন ও কুরুচিকর বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। জাতীয় মহিলা কমিশন মহুয়ার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশে এফআইআর দায়ের করে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৯ নং ধারা অনুসারে কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়।
এই প্রথম নয়। আগেও বিতর্কিত মন্তব্যে একাধিকবার নাম উঠে এসেছিল মহুয়া মৈত্রর। লোকসভায় আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিবিড় সম্পর্ক নিয়ে বরাবর সরব ছিলেন মহুয়া। একবার নদিয়ার গয়েশপুরের কর্মিসভার সভায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ বলে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এই ঘটনা গড়ায় কোর্ট পর্যন্ত। সমন জারি করে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। ২০২০ সালে নদিয়ার গয়েশপুরে করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীসভা ছিল। ‘কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভিতরে ডাকে? সরাও প্রেসকে এখান থেকে। কেন দলের মিটিংয়ে প্রেস ডাকো তোমরা? কর্মী বৈঠক হচ্ছে আর সবাই টিভিতে মুখ দেখাতে ব্যস্ত।‘ বিতর্ক চরমে উঠতে টুইট করে ক্ষমা চান মহুয়া।
এরপর ২০২৩ এর শেষের দিকে সংসদে প্রশ্নকাণ্ড। টাকা ও উপহার নিয়ে লোকসভায় আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। BJP সাংসদ নিশিকান্ত দুবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান লোকসভার স্পিকারের কাছে। BJP সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ ছিল, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন তুলে মহুয়া মৈত্র লোকসভার স্বাধিকার ভঙ্গ করেছেন। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের আবেদন করেন নিশিকান্ত। আবার আইনজীবী অনন্ত দেহাদরি মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে চিঠি দেন CBI প্রধানকে। অবশেষে সংসদের এথিক্স কমিটির সুপারিশে বহিষ্কৃত হতে হয় মহুয়া মৈত্রকে। যদিও ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ফের জয়ী হন মহুয়া। সংসদে ফিরে বিরোধী পক্ষের উদ্দেশে জবাব দিয়ে দেন নিশ্চুপে।
Discussion about this post