শুধু কাশ্মীর নয়, সামলেছেন চিনকেও। দেশের নতুন স্থলসেনাপ্রধান হলেন জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীদেশের ৩০ তম ‘চিফ অফ আর্মি স্টাফ’পদে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত হলেন লেফটেনান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। মনোজ পান্ডের অবসরের পর তিনি সেনা প্রধানের দায়িত্ব নিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ভাইস চিফ অফ আর্মি স্টাফ পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। মাত্র ৪ মাসের মধ্যেই পদন্নতি হল তাঁর।
উপেন্দ্র দ্বিবেদীর দীর্ঘ ৪০ বছরের সার্ভিস কেরিয়ার বেশ উজ্জ্বল। ১৮ জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলসের কমান্ড অফ রেজিমেন্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে একে একে আসাম রাইফেলস ব্রিগেড, ইন্সপেক্টর জেনারেল, আসাম রাইফেলস পূর্ব, হিমাচল প্রদেশের ৯ কর্পস-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। এছাড়া ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নর্থান আর্মি কম্যান্ডারের ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ পদে কর্মরত ছিলেন দ্বিবেদী।
জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে উপেন্দ্র দ্বিবেদীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। চিন-লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের সময় চিনের সঙ্গে আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। অভিজ্ঞ উপেন্দ্র দ্বিবেদীকে শীর্ষ পদে আনার পিছনে সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কৌশলী চাল হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। কারণ পাকিস্তানের পাশাপাশি বর্তমানে কেন্দ্রের মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে চিন। লাদাখ, হিমাচল প্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ এমনকী গত কয়েক বছরে সিকিম সিমান্তেও নজরে এসেছে লালফৌজের আগ্রাসন। লাদাখ, অরুণাচলে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে দেখা হয়েছে দুই দেশের সেনাকে। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চেয়ে চিনকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে সরকার। তাই নীতিও বদলেছে ভারতের। এহেন পরিস্থিতিতে লেফটেনান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীকে ‘চিফ অফ আর্মি স্টাফ’পদে আনার ঘটনায় কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং চিন সীমান্ত সামাল দিতে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারত সরকার।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার সৈনিক স্কুলের ছাত্র ছিলেন উপেন্দ্র। ১৯৮৪ সালে তিনি ১৮ জম্মু-কাশ্মীর রাইফেলসে যোগ দিয়েছিলেন। ভারতীয় সেনায় যোগ দেওয়ার পর দীর্ঘ ৪০ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। নর্দার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার হিসাবে দীর্ঘ দিন কাশ্মীরে কাজ করেছেন উপেন্দ্র। সেখানে একাধিক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের পরিকল্পনা করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। চিনের ক্ষেত্রেও বিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে উপেন্দ্রের। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষ এবং টানাপড়েন চলাকালীন সমঝোতার জন্য যাঁরা আলোচনা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে উপেন্দ্র ছিলেন অন্যতম।
Discussion about this post