৭৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথ তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। নতুন এই রেলপথে ১০টি নতুন রেলস্টেশনও তৈরি হয়েছে। কিন্তু উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে এই রেললাইনে সারাদিনে চলছে মাত্র একটি ট্রেন। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। আজব ঘটনাটি যদিও ভারতের নয়, ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের।
নতুন রেললাইন, নতুন রেলস্টেশন সবমিলিয়ে খুশিতে নেচে উঠেছিলেন বাংলাদেশের পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার কয়েক লক্ষ বাসিন্দা। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন দিয়েছিল ইশ্বরদী জংশন থেকে পাবনা হয়ে বেড়া উপজেলার চলারচর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথের। ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ৯৮৩ কোটি টাকা। কিন্তু পাঁচ বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় খরচ বাড়ে অনেকটাই। ২০১৯ সালে যখন কাজ শেষ হয় ততদিনে সবমলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা।
এই নতুন রেলপথ চালু হওয়ার পর ওই এলাকার বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, দেশের অন্যান্য প্রান্তের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ আরও সুগম হবে। সড়ক পথের যা খরচ হয় তাঁর থেকে অনেক কম খরচে ট্রেনেই যাতায়াত করা যাবে। কিন্তু এই নতুন রেলপথে মাত্র একটি ট্রেন চলাচল করছে। ফলে সাধারণ মানুষের কোনও সুরাহা হয়নি বলেই দাবি এলাকাবাসীদের। বর্তমানে চলাচল করছে একটি মাত্র ট্রেন ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’; যা পাবনার ঢালারচর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত চলাচল করে। সপ্তাহে ছয় দিন চলা এই ট্রেনটি সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ঢালারচর থেকে ছেড়ে বেলা ১১টায় রাজশাহী পৌঁছায়। আবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে ঢালারচর পৌঁছায় রাত ৮টা ১৫ মিনিটে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, মূলত কর্মী এবং কামরার স্বল্পতার কারণেই এই নতুন রেলপথে একাধিক ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এমনিতেই বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থা ধুঁকছে। বিগত কয়েক বছরে রেলপথের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা। পুরোনো লড়ঝড়ে কামরা দিয়ে জোড়াতাপ্তি দিয়ে কোনও রকমে চালানো হচ্ছে ট্রেন। পর্যাপ্ত রেলকর্মীর অভাবে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ করাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। তাই দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যায়ে নির্মিত নতুন রেলপথে মাত্র একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়েকে।
Discussion about this post