প্রবল সংকটে ভারতীয় ফুটবলের এক নম্বর লীগ আইএসএল ।২০২৪ -২৫ মরশুমে একাদশ আইএসএল কোনক্রমে উৎরে গেলেও ২০২৫-২৬ মরশুমে লীগ হবে কিনা তা নিয়ে প্রবল সংশয়ে খোদ অল ইন্ডিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের অন্দরমহল । আশঙ্কার ঘনঘটা দেখা গেল সদ্য সমাপ্ত দশম আইএসএলেই ।লীগের সংগঠন এফএসডিএল রীতিমতো আগ্রহ হারিয়েছে। টানা ১০ বছর ধরে কোটি কোটি টাকা লোকসান মেনে নিয়ে চালাচ্ছে রিলায়েন্স গোষ্ঠী। মূলত গোষ্ঠীর কর্মী নীতা আম্বানির উদ্যোগেই ‘লেটস ফুটবলে’ র সূত্রপাত ও অগ্রগতি সেই নীতাকেই এবার লিগে দেখা যায়নি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগেই উঠে গিয়েছিল ।তারপরেও ফাইনালে বরাবরই তিনি পুরস্কার দেন ।
এবার লিগ শীল্ড শুধু নয় কাপ ফাইনালেও গরহাজির ।এমনকি ফাইনালের দিন এফএসডিএল এর চেয়ারপারসন এর চিরাচরিত বার্তা শোনা বা দেখা যায়নি। আইএসএলের দশম বর্ষে কোন টাইটেল স্পন্সর পাইনি। এত বছর এই লীগের টাইটেল স্পন্সর ছিল হিরো ।তারা সরে যাওয়ার পরেই কোন টাইটেল স্পনসর মেলেনি। এফএস ডিএলের এক অফিসিয়াল এর কথায় স্পন্সর পাওয়া যায়নি একথা ঠিক নয় । এফ এস ডিএল কোন টাইটেল স্পন্সর নেয়নি ইচ্ছে করেই কারণ টাইটেল স্পন্সর নিলে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হত। নতুন করে কোন দীর্ঘ মেয়দী চুক্তি করতে চায় না এফএসডিএল। এই কারণে লীগে নতুন করে ক্লাব নেওয়ার জন্যই বিট প্রসেস বন্ধ করে দিয়েছে এফ এস ডি এল। আইএসএলের টিভি স্বত্ব ছিল স্টার এর হাতে।আর কোন সংস্থা টিভি স্বত্ব নিতে আগ্রহী না হওয়ায় বেস প্রাইজে দু মরশুমেরজন্য জন্য ভায়াকম ১৮ মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এর দায়িত্ব নেয়। তাদের সঙ্গে এফএসডিএল এর দু’বছরের চুক্তি শেষ হচ্ছে ২০২৫ সালের ১৫ই জুন। ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন ১৫ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় আইএম জি রিলায়েন্সের সঙ্গে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বিনিময়ে ।
নামেই বাণিজ্যিক পার্টনার আসলে সেই দিনই এআইএফ এর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল প্যাটেল ও সচিব কুশল দাস ফেডারেশনের অস্তিত্ব তুলে দিয়েছিলেন রিলায়েন্সের হাতে সেখান থেকে ফেডারেশনের স্পন্সারশিপ, অ্যাডভার্টাইজিং ব্রডকাস্টিং, মার্চেন্ডাইজিং, এর সঙ্গে নতুন ফ্রেঞ্চাইজি লিগ করার অনুমতি দেয়া হয় রিলায়েন্সের হাতে। ১৫ বছরের সেই চুক্তি শেষ হতে চলেছে ২০২৫ সালের ৯ ডিসেম্বর। এর মধ্যে এআইএফ এর নতুন সংবিধান গড়া থেকে নানা কাজের খুঁত ধরে ফেডারেশন বিরোধীরা। বিরোধীরা একগাদা মামলার রুজু করেছে কোর্টে। যা নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ আম্বানি গোষ্ঠী। এফএসডিএল এর ইচ্ছা না থাকলেও জোর করে গিলতে হয়েছে। আই লিগের চ্যাম্পিয়ন কে বিনা ফ্রাঞ্চাইসি ফ্রি দিয়ে আই এস এল এর জায়গা করে দেওয়ার ব্যাপারটাও। অন্য ফ্রাঞ্চাইজি গুলো এ নিয়ে তাদের আপত্তি জানিয়েছে নীতা আম্বানি কে। তাই ২০২৫ সালের ৯ ডিসেম্বরের পর রিলায়েন্স আর থাকবে কিনা সেটাই সন্দেহ ।
রিলায়েন্স থাকবে কিনা সেটা জানতে এআইএফএ এখন মিটিং ও করতে পারবে না। চুক্তিতে পরিষ্কার লেখা আছে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার ৬ মাস আগে পর্যন্ত এ নিয়ে দুপক্ষের আলোচনা হবে না । গত ১০ বছর ফ্রাঞ্চাইজি গুলো বছরে ১৫-২০ কোটি টাকা করে লোকসান করেও রয়েছে শুধু আম্বানিদের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য়। আম্বানিরা সরে গেলে কটা ফ্রাঞ্চাইজি টিম চালাবে, তা নিয়ে থাকছে প্রশ্ন । সব মিলিয়ে ভারতীয় ফুটবলের দরকার একজন ‘উদ্ধার কর্তা’ যিনি লিগে দেবেন নতুন অক্সিজেন ।
Discussion about this post