বর্তমান দিনে খেলোয়াড়দের অনেক চাপ নিয়ে খেলতে হয়। একটা ম্যাচ খারাপ খেললে পরের ম্যাচ দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। এই অবস্থায় সব প্লেয়ারদের আবেগকে প্রকাশ করা বা দমন করা একই রকম হয় না। মাঠের আগ্রাসন আর ব্যক্তিগত জীবন সম্পূর্ণ আলাদা, তার উদাহরণ হিসাবে অনেক ক্রিকেটারের নামই করা যেতে পারে। তবে বর্তমান দিনে অনেকেই সিরাজ এবং বিরাট কোহলির নাম এক সঙ্গেই নিয়ে থাকেন, কারণ তাদের আবেগ এবং আগ্রাসন একই ধরনের বলে মনে করেন অনেক সতীর্থ। যার কাছ থেকে তাদের দেখেছেন তারা এটা বিশ্বাস করেন, তাই যখন গোটা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বিরোধিতা করেছিল মহম্মদ সিরাজের। শাস্তির দাবি তুলেছিলেন রিকি পন্টিংয়ের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার। অ্যাডিলেডে দিন-রাতের টেস্টে ট্রেভিস হেডের সঙ্গে বিবাদের ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র ক্রিকেটার হিসাবে জশ হেজ়লউডকে পাশে পেয়েছেন সিরাজ। হেজ়লউড জানিয়েছেন, আগ্রাসন দেখিয়ে কোনও ভুল করেননি ভারতীয় পেসার।আইপিএলে সিরাজের সঙ্গে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলেছেন হেজ়লউড। ফলে বাকিদের থেকে তাঁকে অনেক বেশি কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তুলে হেজ়লউড বলেন, “সিরাজের আগ্রাসনই ওর অস্ত্র। আমি বেঙ্গালুরুতে ওকে দেখেছি। ওখানে পেস আক্রমণকে ও নেতৃত্ব দিত। ও অনেকটা বিরাট কোহলির মতো। খুব আবেগপ্রবণ। সেটা অনেক সময় আগ্রাসন হয়ে বার হয়। ক্রিকেট ম্যাচে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। সিরাজ কোনও অন্যায় করেনি। এই রকম একটা বড় সিরিজ়ে এই ধরনের আগ্রাসন দেখতেও ভাল লাগে।” সিরাজ মাঠের বাইরে স্পষ্ট কথা বলে থাকেন, যা হয়তো অনেকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ বলে মনে হয়, যে কারনে তিনি মাঠের বাইরে থেকেছেন অনেকদিন। এবার অ্যাডিলেডে টেস্টের দ্বিতীয় দিন ১৪০ রানের মাথায় হেডকে বোল্ড করে উত্তেজিত অঙ্গভঙ্গি করেন সিরাজ। তার এই ব্যবহার পছন্দ হয়নি হেডের। তিনি সাজঘরে ফেরার সময় পাল্টা সিরাজকে কিছু বলেন। সেই ঘটনার রিপোর্ট ম্যাচ রেফারির কাছে জমা দেন আম্পায়ারেরা। দু’জনকেই দোষী মানলেও সিরাজকে বেশি শাস্তি দিয়েছে আইসিসি। তাঁর ম্যাচ ফি-র ২০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে হেডকে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।বিবাদের পরে হেড দাবি করেছিলেন, তিনি সিরাজকে খারাপ কিছু বলেননি। বলেছিলেন, “ভাল বল করেছ।” কিন্তু সিরাজ তা বুঝতে পারেননি। তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে সেই বিতর্কে ঘি ঢালেন সিরাজ। হরভজন সিংহের সঙ্গে আলোচনার মাঝে ভারতীয় পেসার জানিয়ে দেন যে হেড অসত্য বলছেন। সিরাজ বলেন, ‘‘হেড আমাকে কখনওই বলেনি, ‘ভাল বল করেছ।’ সাংবাদিক বৈঠকে হেড যা বলেছে, তা সত্যি নয়। আমি অসম্মানজনক কোনও মন্তব্য করিনি। উইকেট পেয়ে উৎসব করছিলাম। আমরা পরস্পরকে সম্মান করি। তার মানে এই নয় প্রতিপক্ষের সব কিছু মেনে নিতে হবে। ক্রিকেট খেলাটা ভদ্র লোকের। ওর মন্তব্য আমার ভাল লাগেনি। আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই খেলছি।’’পরে হেড আরও দাবি করেন যে, সিরাজের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে ফেলেছেন তিনি। তৃতীয় দিন সিরাজ ব্যাট করতে নামার সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের। বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চান না তাঁরা। হেড বলেন, “সিরাজ ব্যাট করতে নামার সময় আমাদের কথা হয়েছে। ও বলেছে, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমাদের সব ভুলে এগিয়ে যাওয়া উচিত। আমিও তাতে রাজি হয়েছি। ও অবশ্য বলেছে, আমি গালাগাল কেন করেছি। জবাবে আমি বলেছি, প্রথমে আমি কিছু বলিনি। কিন্তু ওর ওই আগ্রাসন দেখে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলাম। মাঠে এ সব হতেই পারে। আমরা দু’জনেই মিটিয়ে নিয়েছি।” এই প্রসঙ্গে সিরাজ অবশ্য এখনও কিছু বলেননি।তবে টেস্ট ম্যাচে আগ্রাসন না থাকলে, খেলা জমে না, মাঠে দর্শক টানতে হলে দু-একজনকে আগ্রাসন দেখাতেই হবে বলে মনে করেন অনেক ক্রীড়াপ্রেমীরা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের অংশ গ্রহন নিয়ে, পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক দড়ি টানাটানির পর, যদিও বা হাইব্রিড মডেলে ভারত পাকিস্তান রাজি হল।...
Read more
Discussion about this post