মুম্বাই সমর্থকেদের রোহিত আবেগ আর তাতে সমাজ মাধ্যমের নানান ধরনের মতামত জন্ম দিয়েছিল বিভিন্ন মিথ্যে গল্পের। আর সেই গল্পের সত্যা সত্য,যিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন সেই যশপ্রীত বুমরা এবার আসল সত্য ফাঁস করলেন। কখনও কখনও তাকেও সেই গল্পে সামিল করা হয়েছে। খুব সম্ভবত তিনিই খুব কাছ থেকে দেখেছেন পুরো ঘটনাটা।
তিনি এবং তার সতীর্থরা কাছ থেকে দেখেছেন অন্য দুই সতীর্থের সমস্যা। আইপিএলে রোহিত শর্মার জায়গায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক করা হয় হার্দিককে এর ফলে হার্দিককে একের পর এক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যকে। সেই সময়ে কি মুম্বইয়ের সাজঘর দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল কিনা সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন বুমরা।একটি সাক্ষাৎকারে রোহিত-হার্দিক বিতর্কে মুখ খুলেছেন বুমরা। শোনা গিয়েছিল, হার্দিক অধিনায়ক হওয়ার পরে মুম্বইয়ের সাজঘর দু’ভাগে বিভক্ত। এক দল প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিতের পক্ষে। আর এক দল হার্দিকের সঙ্গে ছিল। বুমরা অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। পুরো দল হার্দিকের পাশেই ছিল। বুমরা ঐ সাক্ষাৎকারে বলেন, “গোটা দুনিয়ায় সকলে যা ভাবে ভাবুক, আমরা জানি আসল ঘটনা কী। গোটা দল হার্দিকের পাশে ছিল। সমর্থকেরা যা করছিল, তাকে আমরা কখনওই প্রশ্রয় দিইনি। আমরা হার্দিকের সঙ্গে কথা বলতাম। ওর কিছু প্রয়োজন কি না জিজ্ঞাসা করতাম। একটা পরিবারের মতো ওর পাশে থেকেছি। কিন্তু তার পরেও অনেক কথা হয়েছে। আসলে কিছু কিছু বিষয় আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সেটাই হয়েছে।”
সমর্থকদেরও দোষ দেননি বুমরা। তাঁর মতে, দলের প্রতি আবেগ ও ভালবাসার কারণেই এমনটা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটা দেশে বাস করি যেখানে আবেগের বড় জায়গা আছে। এখানে সকলেই আবেগ নিয়ে চলে। আমরা বুঝতে পারি, কোনও সিদ্ধান্ত খারাপ লাগলে সমর্থকেরা রেগে যায়। সেটা আবেগের জন্যই। আমরাও আবেগপ্রবণ। তবে ক্রিকেটার হিসাবে আমাদের সেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সেটাই হার্দিক করেছিল।”
বুমরার মতে, যে ভাবে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গ্যালারি থেকে লাগাতার হার্দিককে হেনস্থা করা হয়েছে, তা সামলানো সহজ ছিল না। হার্দিক তা সামলে ভাল খেলার চেষ্টা করেছে। বুমরা বলেন, “এটা সহজ নয়। আপনি মাঠে নেমে শুনছেন গ্যালারি থেকে আপনার বিরুদ্ধে চিৎকার হচ্ছে। তার মাঝে খেলা কঠিন। কারণ, আপনি তো আর কান বন্ধ করে থাকতে পারবেন না। হার্দিক পেরেছিল। হাসিমুখে গোটা মরসুম খেলেছে। এক বারও রাগ দেখায়নি। হতাশ হয়নি। ও যে ভাবে এই পরিস্থিতি সামলেছে তা এক কথায় অসাধারণ।”
ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরার পরে সেই ওয়াংখেড়েতেই হার্দিকের নামে জয়ধ্বনি উঠেছে। সেই উদাহরণ টেনে এনে বুমরা বলেন, “সাফল্যের কোনও বিকল্প নেই। খেলায় প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও শুনতে হবে। বিশ্বের সেরা ফুটবলারদেরও সমালোচনা শুনতে হয়। সময় খারাপ থাকলে সব কিছু খারাপ হয়। তাতে হতাশ না হয়ে অপেক্ষা করতে হয়। সময় বদলায়। হার্দিক সেটা দেখিয়েছে।”হার্দিকের পাশাপাশি নিজের প্রথম অধিনায়ক রোহিতের কথাও বলেছেন বুমরা। মুম্বইয়ে প্রথম যখন খেলতে যান, তখন ফিল্ডিং সাজাতে পারতেন না। রোহিতের উপর ভরসা করতেন। রোহিত সেই সময় তাঁকে খুব সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন বুমরা। তবে হার্দিক রোহিত নিয়ে যে ধরেনের সমস্যা চলছিল তা অনেক আগেই যদি কোন সতীর্থ মুখ খুলতেন তাহলে হয়তো একটা ঘটনা এতদুর বয়ে নিয়ে যেতে হতনা সমর্থকদের।
Discussion about this post