২০২১ থেকে ২০২৪। মাঝে কেটে গিয়েছে ঠিক ১১০০ দিন আর অসংখ্য আতঙ্কের রাত। ২০১১-এর ইউরো কাপে ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ডেনমার্কের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন। এরপর হার্টে জটিল অস্ত্রোপচার হয় এই তারকা ফুটবলারের। তারপর ডেনিশ জনতা এবং সারা বিশ্বের অসংখ্য ফুটবলপ্রেমীদের টেনশন ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন এরিকসনকে চিরকালের জন্য ফুটবল ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু হয়নি, অনেকটা ফিনিক্স পাখির মতো উঠে এসেছেন ডেনিস তারকা। আর এবারের ইউরো কাপে প্রথম ম্যাচেই গোল করে ফুটবলপ্রেমীদের বুঝিয়ে দিলেন, তিনি রূপকথার নায়ক।
তিন বছর আগে ইউরো কাপে ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল এরিকসনের। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাঠেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। খেলা বন্ধ ছিল দীর্ঘ সময়। সেবার প্রাণে বেঁচে গেলেও ডাক্তারদের নিদান ছিল, খেলা ছাড়তে হবে। যদিও যারা আজীবন লড়াই করেন, তাঁদের কাছে এটা কোনও যুক্তি নয়।ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন ফের মাঠে ফিরলেন। এমনকি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সেরা ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে চুটিয়ে ফুটবল খেললেন। লড়াইয়ের সমর্থক শব্দ তখন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন। রবিবার ইউরো কাপে প্রথম ম্যাচে নামল ডেনমার্ক। আর ঠিক ১৭ মিনিটে গোল করে প্রমান করলেন তিনি হারিয়ে যাননি। ১১০০ দিন পরে একটা বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হল রবিবার। ম্যাচের আগে ডেনমার্কের কোচ হিউল মান্ডের বক্তব্য ছিল,” ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ছন্দ খুঁজে পাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে এরিকসনের। ওই আমাদের হার্ড ওই আমাদের পালস্ । এরিকসন যে এখনো ডেনমার্ক টিম হৃৎস্পন্দন তা বুঝিয়ে দিলেন খেলা শুরুর পরেই।
বক্সের ভিতরে পৌঁছানোর পরে চেস্ট ট্রাপ করে বলটা নামিয়েই শট মারেন । স্টুটগার্ডের গ্যালারি ভরে তখন নাচছেন গাইছেন লাল জার্সির সমর্থকর। তিন বছর আগে কোপেনহাগেনের পার্কেনের সঙ্গে ইমোশনের তফাৎ বিশাল। সেদিন তাঁর সতীর্থদের মত গ্যালারিতে কাঁদছিলেন হাজার হাজার সমর্থক ।জ্ঞান তখনো ফেরেনি এরিকশনের। এদিন তাঁরাই নিঃসন্দেহে হাসছিলেন। গোলের পরে এরিকশনের উচ্ছ্বাস বলে দিচ্ছিল, ফিরে আসলে এভাবেই আসতে হয়। লক্ষ্য মানুষের প্রেরণা হয়ে। ম্যাচের রেজাল্ট গৌণ করে। ইউরো ২০২৪। প্রথম ম্যাচ ডেনমার্কের প্রতিপক্ষ স্লোভেনিয়া ।এবার তিনি লুটিয়ে পড়লেন না ।গোল করে এগিয়ে দেন দলকে শেষমেষ যদিও তাঁর দল এই গোল ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় এক এক ড্র করে স্লোভেনিয়া।
Discussion about this post