ভারত এবং দক্ষিন আফ্রিকা দুই দেশের কাছেই এটা শুধুমাত্র একটা বিশ্বকাপ ফাইনাল ছিল না, দুই দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের প্রাণ ভ্রমরা লুকিয়ে ছিল এই ম্যাচে। অনেক দেশের থেকে শক্তিশালী দেশ হয়েও এই প্রথমবার প্রোটিয়ারা কোন আইসিসি ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ খেলল, এবার জিতলে প্রোটিয়াদের চোকার্স তকমা তহয়তো ঘুচত, কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ বেশ কয়েক বছর অন্ধকারে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কারণ ভারতীয় দলে ভাঙনের বীজ পুতা হয়ে গিয়েছিল আইপিএল ২০২৪ এর শুরু থেকে। রোহিতের মত খেলোয়াড় এবং যিনি এখনও দেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করছেন তাকে সরিয়ে হার্দিককে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনাক করে মুম্বাই। এবং মাঠে হার্দিকের বেশ কিছু আচরণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলের মধ্যেই।
রোহিত বেশীদিন অধিনায়ক থাকবেন না ধরে নিয়ে অনেক ক্রিকেটারই ভিতরে ভিতরে হার্দিকের দলে ঝুকে যায়। যাকে কেন্দ্র করে ভাগ হতে শুরু করে ভারতীয় শিবির। আর যার ফলে নষ্ট হতে থাকে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান। স্পষ্ট হতে শুরু করে নিজেদের মধ্যে বিদ্বেষ ও ঘৃনার পরিবেশ। যাতে ঘৃতাহুতি ঘটায় সমাজ মাধ্যম। যন্ত্রনায় বিদ্ধ হতে থাকে দু-ই শিবিরই। এই সবকিছু চাইলেও লুকানো সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ হার্দিক রোহিত বুমরা এই নাম গুলো শুধুমাত্র এক একটা নাম নয়, ভারতীয় ক্রিকেটে এই মহুর্তে বিশাল বিশাল স্তম্ভ। তাই এই বিশ্বকাপ ফাইনাল হেরে গেলে আইপিএল থেকে যে ভাঙন আর বিদ্বেষের জন্ম হয়েছিল, তা মহিরূহে পরিনত হত। আর সেটা যে হার্দিক,রোহিত,বুমরারা কেউ চায়নি তা বিশ্বকাপ জেতার পর তাদের আবেগ এবং উচ্ছ্বাসের প্রকাশ থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।
তাই বিশ্বকাপ জেতার পরে কথা বলতে গিয়ে হার্দিক বলেন, “খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছি। অনেক পরিশ্রম করেছি। কিন্তু সাফল্য আসছিল না। আমার কাছে এটা আরও বিশেষ মুহূর্ত। কারণ, গত ৬ মাসে আমার সঙ্গে অনেক কিছু হয়েছে। চুপ করে ছিলাম। একটাও কথা বলিনি। জানতাম, যদি পরিশ্রম করে যাই তা হলে একদিন জবাব দেওয়ার সুযোগ পাব। জানতাম, একদিন এই দিনটা আসবে।” অন্যদিকে আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল রোহিতকে। নতুন অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। মাঠে রোহিতের সঙ্গে বেশ কিছু আচরণ ভালোভাবে নেইনি রোহিতভক্তরা। আর সাত মাস পরে দেশের অধিনায়ক হিসাবেই বিশ্বকাপ জিতলেন তিনি। এই সাত মাসে নিজেকে বদলেছেন রোহিত। নিজের খেলার ধরন বদলেছেন।
অধিনায়কত্বের ধরন বদলেছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, অধিনায়ক হিসাবে কতটা সাহসী তিনি। তাঁর সাহস দেশকে এনে দিয়েছে বিশ্বকাপ জেতার গর্ব। হার্দিক রোহিত বুমরা তথা ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতিটি সদস্যই জানত এবার হেরে দেশে ফিরলে, তাদের নিয়ে অনেক বেশী কাটছেঁড়া হত। প্রশ্ন উঠত আইপিএলে একশো শতাংশ দিয়ে খেলোয়াড়রা কেনে দেশেহ হয়ে খেলতে নেমে সাফল্য পায় না। যে প্রশ্ন থেকে বাঁচতে পারেন নি স্বয়ং ধোনিও। তবে এখন এটা স্বস্তির যে আর কেউ পিছনে ফিরে তাকাবে না, কারণ বিদ্বেষ ঘৃণা ভুলিয়ে সকলকে এক করে দিয়েছে এই বিশ্বকাপ জয়।
Discussion about this post