২০০৩ সালের ২২শে মে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল জেমস আন্ডারসনের লর্ডসের মাঠে। সেই মাঠেই ১২ই জুলাই ২০২৪ জীবনের শেষ টেস্ট খেললেন ৪১ বছরের ফাস্ট বোলার। জেমস অ্যান্ডারসনের ক্রিকেট জীবনে রয়েছে টেস্টের ৭০৪ টি উইকেট । ২১ বছরের ক্রিকেট জীবনে নিজেকে এমন একটা উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন ,তার অভাব অনুভূতি হতে বাধ্য ।ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে তার স্থান পূরণ হবে। তবে আর একটা জেমস মাইকেল অ্যান্ড্যারসন তৈরি হবে না । দ্বিতীয় রিচার্ড হ্যাডলি ,কপিল দেব, ইমরান খান যেমন তৈরি হয়নি তেমনি হয়তো একটা অ্যান্ডারসন হবে না। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল ক্রিকেটকে বিশ্বজনীনকরে তুলতে সাদা বলে ক্রিকেটকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে সরাসরি বললে ২০ ওভারের ক্রিকেটকে বিনোদনের মোড়কে পরিবেশন করা হচ্ছে বিশ্বের সামনে। টাকার তুলি নিয়ে ক্রিকেটারদের পিছনে ছুটছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা।
টেস্টকে রাখা হয়েছে অনেকটা সংরক্ষণ করে ।ক্রিকেটের কৌলিন্য বজায় রাখতে ।অর্থ,প্রচার, জনপ্রিয়তা, টেস্ট ক্রিকেটে এখন আর আগের মত নেই। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরাও এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হতে চায়। ক্রিকেট জীবনের মধ্য গগনে সাদা বলের ক্রিকেটকে দূরে ঠেলে পাঁচ দিনের লাল বলের লড়াই কে আপন করে নেবে কে! তাই আর একটা আন্ডারসন পাওয়া খুব কঠিন। ইংল্যান্ডের হয়ে ১৮৮ টি টেস্টে তিনি ৭০৪টি উইকেট নিয়েছেন ১৫৪টি একদিনের ম্যাচে ২৬৯ উইকেট এবং ১৯ টি আন্তর্জাতিক টিটোয়েন্টি ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৮ উইকেট মোট ৯৮৭ উইকেট নিয়েছেন । আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত উইকেট আর কোনো জোরে বোলারের নেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন গ্রেন ম্যাকগ্রা অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন জোরে বলার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়েছেন ৯৪৯ টি উইকেট। শুধু টেস্ট ক্রিকেট ধরলে ম্যাকগ্রার উইকেট ৫৬৩। তিনিও লাল বলের ক্রিকেটকে অ্যান্ডারসনের মত গুরুত্ব দেননি। গত মার্চে ধর্মশালায় ভারতের বিরুদ্ধে খেলা আন্ডারসনের টেস্ট ছিল তার জীবনের ৪০০ তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
দেশের হয়ে ৪০১ টি ম্যাচ খেলে অবসর নিলেন জিমি । বিশ্বের প্রথম জোরে বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে চল্লিশ হাজার বল করার মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন। অবসর নেয়ার পর তিনি বলেছেন, টেস্ট ক্রিকেট একজন ক্রিকেটার এর দক্ষতার পরীক্ষা নেয় এবং তার প্রকৃত চরিত্রকে প্রকাশ করে ।তার এই কথা থেকে পরিষ্কার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবন শেষ দিন পর্যন্ত নিজেকে পরীক্ষা বসানো সিদ্ধান্ত হবে আগেই নিয়েছিলেন ।দেশের হয়ে শেষ বার সাদা বলে ক্রিকেট খেলেছেন ২০১৫ সালে ।শেষ ৯ বছরে কেবল নিজেকে পরীক্ষা দিয়েছেন। নিজের ক্রিকেট দক্ষতার বিশ্বাস ভরসা না থাকলে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সহজ নয়। হানডার্স এন্ড নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার। ২২ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনে একজন জোরে বোলারের,! অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তব। অ্যান্ডাররসন আসলে আধুনিক ক্রিকেটের একটি যুগের নাম। তার অবসরের সঙ্গে সঙ্গে একটি যুগের সমাপ্তি ঘটলো।
Discussion about this post