” ১৮ বছর বয়স কি দুঃসহ , স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি, ১৮ বছর বয়সেই অহরহ বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি।” ১৮ বছর বয়সী চ্যাম্পিয়ন দোম্বারাজু গুকেশ। দাবার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে। সিঙ্গাপুরের রিসর্ট ওয়ার্ল্ড সেন্টোসায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লিখলেন নয়া ইতিহাস। দাবা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শেষ ও ১৪ নম্বর গেমে যে জিতবে সেই চ্যাম্পিয়ন হবে এরকম ডুয়েল সমউত্তেজক লড়াইয়ে মাথা অস্বাভাবিক ঠান্ডা রেখে এল সাফল্য । কাল ঘু৺টি, নিয়ে খেলে ৫৮ তম চালে বিশ্বজয় ।স্কোর গুকেসের পক্ষে ৭.৫ -৬.৫। চেন্নাইবাসী শান্ত, সৌম্য, টিন এজার ।দাবার বোর্ডের সামনে বসে থাকলে নিষ্পৃহ মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই মনের হালচাল ।চ্যাম্পিয়ন দিং লিরেনও ভড়কি খেলেন ওই মুখ দেখেই। লিরেনের একটা ভুল তারই ফয়দা তুলে নিলেন। গেম শেষ হওয়ার পরে উত্তেজনা ,আনন্দ ,চোখে জল -অনেক ইমোশন ভিড় করল টিনেজারের চোখে মুখে। একটু পরে শান্ত হবে বলে দিলেন, ‘এই মুহূর্তে যেন আমার দেখা স্বপ্নের মধ্যে রয়েছি।’ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি সহ সবার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে তখন অভিনন্দনের বন্যা। আর গুকেশ ধন্যবাদ জানিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর টিমকে। এদের সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ইতিহাস গড়ার জন্য এবং কনিষ্ঠতম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন । অসাধারণ এই কৃতিত্ব গর্বিত করেছে গোটা দেশকে ।এই জয়ের আনন্দ করছে দেশ ।জয় হিন্দ।’ মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এর তাৎপর্য কি? ভারতের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়ার মন্তব্য, “শুধু দাবায় নয়, যত দিন যাচ্ছে সব খেলায় তরুণদের দাপট বাড়ছে। আমি অন্তত ১৮ বছরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে দেখে অবাক হয়নি ।তবে ভারতীয় হিসেবে গুকেশের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নিয়ে গর্বিত দিব্যেন্দুর কথায়, আনন্দের পরে দ্বিতীয় ভারতীয় যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কোন সন্দেহ নেই গোটা ভারতে দাবা নতুন করে জনপ্রিয় হবে । খেলার জগতে ভারত আর একজন আইকন পেল ।সিঙ্গাপুরের এই হলে গত প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে অনেক খুদে এসেছে মা-বাবার হাত ধরে।নিঃসন্দেহে তাদের অনেকে হয়তো স্বপ্ন দেখবে গুকেশকে সামনে রেখে ।যেমন গুকেস বলেছিলেন যে পৃথিবী ম্যাগনাস কে চ্যাম্পিয়ন হতে দেখার পরে ভাবতাম আমি একদিন বিশ্বের সেরার শিরোপা ভারতে নিয়ে আসব।’২০১৩ সালে চেন্নাইয়ে আনন্দ হারিয়ে প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কার্লসেন । গুকেশের কথায় ‘সেই লড়াই সামনে থেকে দেখার পরে মনে হয়েছিল এই জায়গায় একদিন পৌঁছাতে পারলে দারুন হবে। আজ সত্যিই সেই জায়গায় বসে, পাশে তেরঙ্গা, আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত।’ । ছেলেবেলা থেকেই আনন্দকে ‘স্যার’ হিসেবে দেখে এসেছেন গুকেশ ।নতুন বিশ্বের চ্যাম্পিয়নের কথায় ,’ ভিশি স্যার’ কখনওই আমার টিমের সদস্য ছিলেন না ।কিন্তু প্রস্তুতির সময় কয়েকবার দূর থেকেই ওঁর পরামর্শ পেয়েছি।’ ভারতীয় দাবার মাইলস্টোন হয়ে থাকলে ২০২৪ । এ বছরেই ছেলে ও মেয়েদের টিম দাবা অলিম্পিয়াড জয়ী। এ বছরই অর্জুন এরিগাইসির ২৮০০ রেটিং পেরোনো ।আর বছরের শেষে দেশ পেল ৬৪ খোপে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের অংশ গ্রহন নিয়ে, পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক দড়ি টানাটানির পর, যদিও বা হাইব্রিড মডেলে ভারত পাকিস্তান রাজি হল।...
Read more
Discussion about this post