অস্ট্রেলিয়াতে পৌঁছেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন বিরাট ।তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিমানবন্দরে এক মহিলা সাংবাদিককে ধমক দিয়েছেন কোহলি। একের পর এক এই ধরনের অভিযোগে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে মাঠের বাইরের উত্তাপ বেড়েই চলেছে। চতুর্থ টেস্ট খেলতে মেলবোর্নে স্ত্রী অনুষ্কা, কন্যা ভামিকা ও পুত্র অকায়কে নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন বিরাট কোহলি। তখন এক মহিলা সাংবাদিক কোহলির সন্তানদের ভিডিয়ো করার চেষ্টা করেন। তা বুঝতে পেরে কোহলি তখন ঐ সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন। সন্তানদের ভিডিয়ো মুছে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কোহলি এটাও জানান, ওই সাংবাদিক চাইলে তাঁর ছবি নিতে পারেন। তখনকার মত ঘটনা মিটে গেলেও, পরে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম। কয়েক জন সাংবাদিকের অভিযোগ, অস্ট্রেলিয়ার বিমানবন্দরে কারও ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা নেই। প্রধানমন্ত্রী গেলেও অনেকে তাঁর ছবি তোলেন। কোহলি ক্রিকেটের এত বড় তারকা। তাই তাঁর ছবি তোলার চেষ্টা কেউ করতেই পারেন। কিন্তু অভিযোগ কোহলি ওই মহিলা সাংবাদিককে ধমক দিয়েছেন। শুধু ওই সংবাদিককে নয়, তাঁর সঙ্গে থাকা ক্যামেরাম্যানদেরও ধমক দিয়েছেন কোহলি। ওই সাংবাদিকদের অভিযোগ, কোহলির ধমক খেয়ে ভয় পেয়ে যান ওই মহিলা সাংবাদিক। কোনও রকমে সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি।তবে সকলে যখন বিরাট কোহলির সমালোচনায় ব্যস্ত, তখন তাঁর ‘নাটক’এর প্রশংসা করলেন পিটারসেন। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়কের মতে বিরাটকে ছাড়া টেস্ট ক্রিকেট দেখা ক্লান্তিকর হয়ে যাবে।মেলবোর্নে আলোচনার কেন্দ্রে বিরাট। প্রথম দিনেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ব্যাটার স্যাম কনস্টাসকে ধাক্কা মারেন। যে কারণে তাঁর ম্যাচ ফি-র ২০ শতাংশ কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইসিসি। সঙ্গে একটি ডিমেরিট পয়েন্টও দিয়েছে। যে ঘটনা নিয়ে সরগরম ক্রিকেট মহল। কারও মতে বিরাটের এমন করাটা উচিত হয়নি। কনস্টাস যদিও মাঠের লড়াই বাইরে আনতে চাননি। তিনি চান মাঠে যা ঘটেছে, তা সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকুক।দ্বিতীয় দিনে আবার যশস্বী জয়সওয়ালের রান আউটের জন্য অনেকে বিরাটকেই দায়ী করছেন। ব্যাটারের ডাকে সাড়া দেননি নন-স্টাইকার বিরাট। যে কারণে আউট হয়ে যান যশস্বী। তবে আদৌ ওই বলে রান নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত হয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন থাকবে। এমন অবস্থায় পিটারসেন বলেন, “বিরাট মাঠে নাটক করছে। চলুন দেখা যাক। ভাবুন তো এমন চরিত্র ছাড়া খেলা দেখাটা কত ক্লান্তিকর হয়ে যাবে। বিরাট কেরিয়ার জুড়ে রান করে এটা অর্জন করেছে। বিরাট যা করেছে তার চার ভাগের এক ভাগ করেই অনেকের সফল কেরিয়ার শেষ হয়ে যায়।”পিটারসন প্রশংসা করলেও অনেকেই বিরাটের ব্যবহার মেনে নিতে পারছেন না। ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন বলছিলেন, কনস্টাসকে উত্তেজিত করার জন্যই এ কাজ করেছেন বিরাট। তিনি এই কাজের তীব্র নিন্দা করেন। বলেন, “বিরাটের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারের এমন কাজ শোভা পায় না।” খুশি হতে পারেননি সুনীল গাওস্করও। বলেন, “দু’জনকেই শাস্তি দেওয়া উচিত।” রিকি পন্টিং বলেন, “কোহলির হাঁটাটা এক বার খেয়াল করুন। সোজা হাঁটতে হাঁটতে ডান দিকে এসে জোর করে ওকে ধাক্কা মারল।” স্যাম কনস্টাসের সঙ্গে ধাক্কার পর থেকেই বিরাট কোহলির সমালোচনা চলছে। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অনেকেই ভারতীয় ক্রিকেটারকে কটাক্ষ করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার কেরি ও’কিফ তাঁকে অহংকারী বলেছিলেন। তবে তিনি আবার ক্ষমাও চাইলেন।মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনে কনস্টাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বিরাটের। যে ঘটনায় আইসিসি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের ম্যাচ ফি-র ২০ শতাংশ কেটে নিয়েছে। ও’কিফ সেই সময় বলেছিলেন, “বিরাটের পুরো কেরিয়ারটাই তৈরি অহংকারের উপর। সামনে এক জন অভিষেককারীকে দেখে সেটা আবার বেরিয়ে আসে।” প্রথম দিনে বিরাটের সমালোচনা করলেও দ্বিতীয় দিনে ও’কিফ বলেন, “বিরাটকে অহংকারী বলার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমার এটা বলা ঠিক হয়নি। ওর একটা নিজস্ব কায়দা আছে। সেটা বজায় রেখেই খেলে ও। আমার মনে হয় অন্য এক জন ক্রিকেটার যখন তাঁর মতো কায়দা দেখাচ্ছিল, তখন বিরাট সেটা মেনে নিতে পারেনি। বিরাট আগ্রাসী, সেটাই তাঁকে লড়াকু করে তোলে।”গত শুক্রবার মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের দশম ওভার শেষ হয়েছে। মহম্মদ সিরাজ সেই ওভার শেষ করার পর দিক পরিবর্তন করার জন্য হেঁটে আসছিলেন কোহলি। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন কনস্টাসও। দু’জনের কাঁধে ধাক্কাধাক্কি হয়। বার বার ধাক্কাধাক্কির ঘটনার রিপ্লে দেখাতে থাকে সম্প্রচারকারী চ্যানেল। সেখানে অবশ্য দেখা গিয়েছে, কনস্টাস মাথা নিচু করে ব্যাট হাতে যাচ্ছিলেন। কোহলিই যাওয়ার পথে, দিক পরিবর্তন করে কনস্টাসের কাছে গিয়ে তাঁকে ধাক্কা মারেন।কনস্টাসকে ধাক্কা মারার কারণে কোহলির ম্যাচ ফি-র ২০ শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে লেভেল ওয়ান অপরাধ বলে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছেন তিনি। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ২৪ মাসের মধ্যে চারটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে নির্বাসিত হতে হয়।এখন দেখার এত বিতর্কের পর সিরিজের ফলাফল কি হয়।
আর একদিন পরই আমরা পৌঁছে যাব আরও একটি নতুন বছরে। তাই ফেলে আসা বছরের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে কখনও সুখের...
Read more
Discussion about this post