অস্ট্রেলিয়া বরাবরই মরিয়া থাকে জেতার জন্য, আর তার প্রস্তুতি শুরু করে দেয় বহু আগের থেকেই। এবারও ভারত যখন অন্য দেশের সঙ্গে খেলায় ব্যস্ত, তখন থেকেই ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করতে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বর্তমান জাতীয় দলে থাকা ক্রিকেটারদের থেকে। সে বিরাটের টেস্ট সেঞ্চুরি নিয়ে হোক বা বিশ্ব একাদশে ভারতের কোন ক্রিকেটারের দলে না রাখার মন্তব্য করা নিয়ে হোক। এখন সঙ্গে জুড়েছে অনুশিলনে খারাপ পিচ দিয়ে ভারতীয় বোলারদের বিভ্রান্ত করার নতুন কৌশল। এখন সিরিজ় ১-১ ব্যবধানে রয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর থেকে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামবে ভারত। এই ম্যাচ জিততে মরিয়া ভারত। সেই ছবিই দেখা গেল নেটে। মেলবোর্নে ভারতের অনুশীলনে দেখা গেল তিন নতুন কোচকে। দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর।মেলবোর্নে অনুশীলনের সময় সিনিয়র খেলোয়াড়েদেরই কোচের ভুমিকা পালন করতে দেখা গেল। শুরুটা করেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মহম্মদ সিরাজ তাঁকে একটি বাউন্সার করেছিলেন। সেই বলটি পুল মারেন রোহিত। তার পরেই তিনি বলেন, “নীচের দিকে তাকানো দেখেই আমি বুঝতে পেরেছি বাউন্সার করবি।” রোহিতের কথা থেকে পরিষ্কার, তিনি আগেই সিরাজের বল বুঝে গিয়েছিলেন।অধিনায়কের কথা শুনে কিছু ক্ষণ ভাবেন সিরাজ। তার পরে আবার বল করতে যান। তার পরে নেটে সিরাজ যে কয়েকটি বাউন্সার করেন, তার একটিতেও নীচের দিকে তাকাননি তিনি। সিরাজের সেই বদল দেখে হাসি ফোটে রোহিতের মুখে। মেলবোর্নে বল করার সময়ও হয়তো রোহিতের কথা মাথায় রাখবেন সিরাজ। শুধু সিরাজ নন, ওয়াশিংটন সুন্দরকেও ভুল ধরিয়ে দেন রোহিত।একই কাজ করতে দেখা যায় বিরাট কোহলিকে। তিনি যখন ব্যাট করছিলেন তখন পাশের নেটে ছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। নিজের ব্যাটিং থামিয়ে যশস্বীকে কিছু বলতে দেখা যায় তাঁকে। কোহলির কথা শুনে মাথা নাড়েন যশস্বী।ভারতের বোলিং আক্রমণের নেতা যশপ্রীত বুমরাকেও দেখা যায় কোচের ভূমিকায়। যশস্বী ও লোকেশ রাহুলকে বল করছিলেন তিনি। যে কয়েকটি বল তাঁদের ব্যাটের কাছ দিয়ে যায়, প্রতিটি বলের পরে বুমরা বলেন, “আরে রে রে।” তিনি বোঝাতে চান, আর একটু হলেই খোঁচা দিতেন তাঁরা। বুমরার একটি বলে খোঁচা মারেন যশস্বী। কিন্তু সে বার বুমরা বলেন, “ঠিক আছে। স্লিপের হাতে বল যেত না।” ভারতীয় ব্যাটারের মনোবল বাড়াতে দেখা যায় তাঁকে।মেলবোর্ন টেস্টের আগে শনি ও রবিবার অনুশীলন করে ভারতীয় দল। সেখানে তাদের যে পিচ দেওয়া হয়েছিল তার বাউন্স খুব কম ছিল। বাউন্সার করার জন্য পেসারদের অনেক পরিশ্রম করতে হচ্ছিল। খুব কম বলই কোমরের উচ্চতায় উঠছিল। পিচের ছবি দেখে বোঝা যাচ্ছিল, বেশ কয়েকটি জায়গা কালো হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, তা নতুন পিচ নয়।পিচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ভারতের পেসার আকাশ দীপ। তিনি বলেন, “দেখে মনে হচ্ছিল ওটা সাদা বলের উইকেট। বাউন্স ছিল না। পিচে অনেক ফাটল ছিল। পেসারদের খুব পরিশ্রম করতে হয়েছে। ম্যাচে যে উইকেট থাকে তার সঙ্গে এই উইকেটের অনেক তফাত।”নেটে অনেক ক্ষণ অনুশীলন করে ভারত। কিন্তু মেলবোর্নের উইকেটে বাউন্স খুব কম। কয়েকটি বলই কোমরের উপরে ওঠে। অনেক পরিশ্রম করতে হচ্ছিল পেসারদের। কয়েকটি বল অবশ্য ব্যাটারদের গায়ে লাগে। রোহিতের প্যাডে একটি বল লাগার পরে দেখা যায়, ব্যাটিং ছেড়ে হাঁটুতে আইস প্যাক বেঁধে বসে রয়েছেন তিনি। পরে অবশ্য হোটেলে ফেরার সময় রোহিতকে দেখে মনে হয়নি কোনও সমস্যা হচ্ছে তাঁর।সোমবার অনুশীলন ছিল না ভারতের। সে দিন অনুশীলন করে অস্ট্রেলিয়া। দেখা যায়, পিচ বদলে গিয়েছে। অনেক তাজা উইকেটে অনুশীলন করে অস্ট্রেলিয়া। তাতে ফাটল ছিল না। বলের গতি ও বাউন্সও অনেক বেশি ছিল। দু’টি পিচের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকে বলেন, অস্ট্রেলিয়া নিজেদের খেলা শুরু করে দিয়েছে। ম্যাচ জিততে তারা এতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে যে বিপক্ষকে অনুশীলনের জন্য ভাল পিচও দিতে চাইছে না।এই বিতর্কের মাঝে মেলবোর্নের পিচ প্রস্তুতকারক ম্যাট পেগ জানিয়েছেন, এটি খুব সাধারণ একটি ঘটনা। টেস্ট শুরুর তিন দিন আগেই অনুশীলনে নতুন উইকেট দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “ভারত আমাদের আগেই জানিয়েছিল কবে অনুশীলন করবে। আমরা সাধারণত ম্যাচ শুরুর তিন দিন আগে অনুশীলনে নতুন উইকেট দিই। সেটাই এ বারও করা হয়েছে। এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই।”। পেগ জাই বলুন না কেন, এটা যে অস্ট্রেলিয়ার নতুন চালাকি তা বুঝতে বাকি নেই কারো।
: চলতি বর্ডার অবস্থায় ট্রফির পাঁচ ম্যাচের সিরিজের ফল এখন ১- ১। বৃষ্টিবিঘ্নিত ব্রিসবেনে তৃতীয় টেস্ট ড্র হয়ে গিয়েছে। আগামী...
Read more
Discussion about this post