অস্ট্রেলিয়াতে ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ হচ্ছে ভারতীয় দল। এখন যে যাকে পারছে দোষ দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তব হল সবাই খারাপ খেলছে। আর সব থেকে বড় কথা যারা অনেকদিন ধরে টেস্ট খেলছে, বা অস্ট্রেলিয়াতে যাদের ব্যাটিং গড় ভালো তারাও ভালো খেলতে পারছে না। তুলনায় নতুনরা ভালো খেলছে। তবে গত টেস্ট ম্যাচে ভুল খেলে আউট হওয়ার জন্য প্রায় সকলেই ঋষভের দিকে আঙুল তুলেছেন। অনেকেই বলছেন টেস্ট ম্যাচে ব্যাটিং করার মানসিকতা দেখা যাচ্ছে না তাঁর মধ্যে। প্রতি ইনিংসে অযথা আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছেন। প্রথম ইনিংসে পুল মারতে গিয়ে আউট হওয়ার পর পন্থের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন সুনীল গাওস্কর। তাঁকে ‘স্টুপিড’ বা বোকা বলেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও অস্ট্রেলিয়ার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে পুল করে আউট হলেন পন্থ।
পার্থ টেস্টে অফ স্টাম্পের বাইরের বল পুল করে ছয় মেরেছিলেন। তার পর থেকে সেই একই শট খেলে আউট হয়ে চলেছেন। সমালোচনাতেও নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে না পন্থকে। একই ভাবে আউট হলেন টেস্টের গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চম দিনেও। দলের প্রয়োজনের সময়ও ধরে খেলার চেষ্টা বা মানসিকতা দেখা গেল না তাঁর মধ্যে।মেলবোর্ন টেস্টে ভারতের পরাজয়ের প্রধান কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। রান পাচ্ছেন না বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা। তবে দলকে ডোবানোর অভিযোগ উঠছে ঋষভ পন্থের বিরুদ্ধে। মেলবোর্নে ভারতের ইনিংসের ছন্দ নষ্ট হওয়ার জন্য আঙুল উঠছে পন্থের দিকেই। সেই অযথা পুল মারতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিলেন তিনি। তাও থিতু হয়ে যাওয়ার পর।কম দিন টেস্ট খেলছেন না পন্থ। মেলবোর্নে নিজের ৪১তম টেস্ট খেলে ফেললেন। ছ’বছর ধরে টেস্ট খেলছেন তিনি। যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জনের পরও এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ক্রিকেট সমর্থন করা যায় না। লাল বলের ক্রিকেটের সঙ্গে সাদা বলের ক্রিকেটের পার্থক্য বোঝা উচিত। সোমবার করলেন ১০৪ বলে ৩০ রান। অর্থাৎ ২২ গজে অনেকক্ষন সময় কাটানোর পরও ট্রেভিস হেডের মতো বোলারের বলে এ ভাবে উইকেট ছুড়ে দেওয়ায় মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। তিনি আউট হওয়ার আগে ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ১২১। তাঁর অবিবেচক ক্রিকেট দলকে সমস্যায় ফেলে দেয় এবং অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।প্রথম ইনিংসে ৩৭ বলে ২৮ রান করে আউট হয়ে যান পন্থ। তিনি অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্কুপ করে ফাইন লেগের দিক পাঠাতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো নাথান লায়নের হাতে। যে সময় ভারতীয় দলের ইনিংস গড়ার প্রয়োজন ছিল, সেই সময় ওই ভাবে উইকেট দিয়ে আসা মেনে নিতে পারেননি গাওস্কর। তিনি বলেন, “জঘন্য শট। যে যে জায়গায় ফিল্ডার দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাতে এই শট খেলা যায় না। স্টুপিডের মতো খেলছে। পন্থ দু’ভাবে খেলতে জানে, এক, বল পেলেই মারো আর দুই, এই ধরনের শট খেলা। টেস্টে এই ভাবে রান করা যায় না। এই ভাবে খেললে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করা যায় না। আরও নীচে নামানো উচিত পন্থকে। তা হলে কখনও কখনও রান করে দেবে পন্থ।”
গাওস্করের সমালোচনাতেও বোধদয় হয়নি পন্থের। যাঁর প্রমাণ সোমবার তাঁর আউট হওয়ার ধরন। পন্থ হয়তো ধরে নিয়েছেন ভারতীয় দলের প্রথম একাদশে তাঁর জায়গা পাকা। নিজের পছন্দ মতো খেলার স্বাধীনতা থাকলেও দলগত খেলায় দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। বোঝা দরকার ম্যাচের পরিস্থিতিও। অন্তত আট বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা এক জনের থেকে এ টুকু আশা করাই যায়।
Discussion about this post