এক সময় সচিনের থেকেও বড় ক্রিকেটার মনে করা হত বিনোদ কাম্বলিকে। একই সঙ্গে শুরু করেছিলেন দুই বন্ধু। এক জন অক্লান্ত পরিশ্রম করে হয়ে গেলেন ক্রিকেটের ভগবান, আর এক জন ক্রিকেট ভুলে বাইরের জগতে ডুবে গেলেন, আর আজ তাকে কেউ মনেই রাখে না। একই ঘটনার দিকে এগোচ্ছে পৃথ্বী এবং যশস্বীর ভবিষ্যত। যেখানে পৃথ্বী আইপিএলে কোন দল পাননি, সেখানে ২৩ বছরের যশস্বী অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৬১ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতাচ্ছেন। রান করার জমি তৈরি করে দিচ্ছেন বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটারকে।এক সময় পৃথ্বীর তুলনা করা হত সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে। ভারতের হয়ে টেস্ট অভিষেকে শতরান করেছিলেন মুম্বইয়ের ওপেনার। কিন্তু মাত্র পাঁচটি ম্যাচ খেলেই শুরুতেই শেষ হয়ে গিয়েছে তাঁর টেস্ট কেরিয়ার। সাদা বলের ক্রিকেটেও দেশের হয়ে শেষ খেলেছেন ২০২১ সালে। শেষ তিন বছরে পৃথ্বীর ক্রিকেট কেরিয়ারের গ্রাফ শুধুই নিম্নমুখী। তবে খবরের শিরোনাম থেকে সরেননি। দামি গাড়ি, নৈশপার্টিতে বার বার ডুব দিয়েছেন পৃথ্বী। ফিটনেসকে সে ভাবে গুরুত্ব দেননি। তাঁর ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পৃথ্বী এবং যশস্বীর বয়সের ফারাক দু’বছরের। ২৫ বছরের পৃথ্বী ভারতীয় দল থেকে অনেক দূরে। আইপিএলের নিলামে দল পাননি। মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছে। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে সুযোগ পেলেও রান পাচ্ছেন না। সেখানে ২৩ বছরের যশস্বী অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৬১ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতাচ্ছেন। রান করার জমি তৈরি করে দিচ্ছেন বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটারকে। দুই ওপেনারকেই খুব কাছ থেকে দেখেছেন কোচ জ্বলা। প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। তাই বুঝতে পারছেন ফারাকটা কোথায়।পৃথ্বী ২০২০ সালে অসত্য কথা বলে ধরা পড়েছিলেন অজিঙ্ক রাহানের কাছে। তখন তিনি ভারতীয় দলে। চোট লেগেছে বলে ফিল্ডিং করছিলেন না পৃথ্বী। অথচ তাঁর কোনও চোটই লাগেনি। অনুশীলনে ফিল্ডিং করবেন না বলে চোট লাগার অভিনয় করেছিলেন। এটা ধরে ফেলেছিলেন রাহানে। এই ঘটনার পর ভারতীয় দল থেকে ব্রাত্য হতে থাকেন তিনি। সেই সঙ্গে ইয়ো-ইয়ো ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি তিনি। ফলে দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল। মাঠের বাইরের জীবনে এতটাই মেতে উঠেছিলেন পৃথ্বী যে, ফিটনেস ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। ছোটবেলায় পৃথ্বী এমন ছিলেন না। কোচ জ্বলা জানিয়েছেন, ক্রিকেট অন্তপ্রাণ ছিল তাঁর ছাত্র। পৃথ্বীর বাবাও ছেলেকে তৈরি করার দিকে বিশেষ নজর রাখতেন। কিন্তু ২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পরেই সব কিছু কেমন বদলে গিয়েছিল। মাথা ঘুরে গিয়েছিল পৃথ্বীর। পৃথ্বীর মন ক্রিকেটের বাইরে বেশি বলেই মনে করছেন তাঁর কোচ। একমত পৃথ্বীর ছোটবেলার কোচ সন্তোষ পিঙ্গুতকরও। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর টাকা এবং খ্যাতি বাড়তে থাকে পৃথ্বীর। এটাই ক্রিকেট থেকে তাঁর মনোযোগ ঘুরিয়ে দেয় বলে মত কোচদের।যশস্বীকে ছোটবেলা থেকে তৈরি করেছেন জ্বলা। পৃথ্বী ১৬ বছর বয়সে তাঁর কাছে এসেছিলেন। যশস্বী আরও অনেক কম বয়স থেকে জ্বলার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। জ্বলার বাড়িতেই থাকতেন বাঁহাতি ওপেনার। জ্বলা বললেন, “যশস্বী ক্রিকেট নিয়েই থাকে। বড় রান করতে ভালবাসে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্রিজ়ে সময় কাটানোর দিকে মন দেয়। শতরান করে ভাবে দেড়শো করার কথা, দ্বিশতরান করার কথা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করে যায়। খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর দেয়। রান না পেলে নেটে বেশি ক্ষণ সময় কাটায়। ওর মনঃসংযোগ, একাগ্রতা, খেলার ইচ্ছা শেখার মতো।” পৃথ্বীর মধ্যে যে জিনিসগুলোর অভাব দেখেন জ্বলা, সেগুলিই দেখছেন যশস্বীর মধ্যে। আগামী দিনে বড় তারকা হওয়ার ক্ষেত্রে যশস্বীর উপর বাজি ধরছেন জ্বলা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের অংশ গ্রহন নিয়ে, পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক দড়ি টানাটানির পর, যদিও বা হাইব্রিড মডেলে ভারত পাকিস্তান রাজি হল।...
Read more
Discussion about this post