ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা হিসেবে পরিচিত মাহেশের জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। এ বছর ৬২৮ বছরে পদার্পণ করল এই উৎসব। এরই প্রাক্কালে মাহেশ জগন্নাথ দেব ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে এখানকার মহাপ্রভুকে দেওয়া ভোগের প্রধান মিষ্টি বালা সন্দেশ, গুটকে সন্দেশকে জি আই ট্যাগ দেবার আবেদন জানানো হলো। তার পাশাপাশি এই প্রাচীন বিগ্রহ এবং এখানকার রথের ইতিহাস যাতে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায়, সেই নিয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মাহেশ জগন্নাথ দেব ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান, পুরীর পর মাহেশের জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার পরিচিতি জগৎ বিখ্যাত। ৬২৮ বছর আগে স্বামী ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী মাহেশে প্রভু জগন্নাথ বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ স্থাপন করেছিলেন। সেই মূর্তি আজও ৬২৮ বছর ধরে নিত্য পূজিত হয়ে আসছেন প্রভু জগন্নাথ দেব। এখানকার রথযাত্রা উপলক্ষে অতীতে বহু মনীষীর পদধূলি পড়েছে শ্রীপাট মাহেশ ধামে, তার মধ্যে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, মা সারদা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে গিরিশচন্দ্র স্বামী বিবেকানন্দ সহ বহু গুণী জ্ঞানী রয়েছেন।
মিষ্টির দোকানের কর্ণধার অমিতাভ দে বলেন, যদি গুটকা সন্দেশ বালা সন্দেশকে জিআই ট্যাগ দেওয়া হয় এবং মাহেশের রথযাত্রা যদি ইউনেস্কো স্বীকৃতি পায় তাহলে প্রভু জগন্নাথ এবং এখানকার রথযাত্রা আরো পরিচিতি লাভ করবে বিশ্বের দরবারে। প্রসঙ্গত, জিআই ট্যাগ পেতে জেলা স্তরে একটি করে কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। প্রতিটি জেলার জেলাশাসককে শীর্ষে রেখে জেলার আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি ওই কমিটির কাছে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কোনও পণ্যের খোজ মিললে কমিটি নিজে থেকেই জিআই স্বীকৃতির জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
পিয়াল জানান, সামনেই রথযাত্রা। জিআই ট্যাগ এবং হেরিটেজ তকমা আবেদনের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে ভক্তদের আসা শুরু হতে চলেছে। তাঁদের যাতায়াতের সুবিধের জন্য পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে দিল্লি রোড এবং জিটি রোডের ওপর মাহেশের পথ নির্দেশ বোর্ড লাগানোর আবেদনও আমরা মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়েছি। মিলেছে মন্ত্রীর আশ্বাস।
Discussion about this post