বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক নিয়ে এখন নানামুখী আলোচনা। বিশেষ করে ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার পতন এবং পালিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের অন্ধ সমর্থন এখনো বহাল। দিল্লি ডান-বাম না দেখে গত ১৫ বছর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাসনেই ভরসা রেখেছে। হাসিনার শাসনামলে নানা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন ছিল গণতান্ত্রিক বিশ্বে। শেখ হাসিনার ‘পক্ষে’ আমেরিকাকে দেওয়া ভারতের বার্তা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের’ পক্ষে আমেরিকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপর যে চাপ তৈরি করেছে তাতে ভারত এতোদিন পর্যন্ত কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ভারত মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে।এদিকে ভারতের বার্তা নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যত সন্তুষ্ট। দলের সাধারণ ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে সেটি ফুটেও উঠেছে। এরই মাঝে লন্ডন থেকে হাসিনার বার্তায় বড়সড় রূপরেখা পেল দল আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিবাদী, গণহত্যাকারী ইউনুসের বিচার হবে। আজকের অন্ধকার কেটে নতুন সূর্যোদয় দেখবে বাংলাদেশ। লন্ডনে ভার্চুয়াল সভায় দৃপ্ত কণ্ঠে জানালেন শেখ হাসিনা। সম্প্রতি লন্ডনে একটি সভার আয়োজন করা হয়। ব্রিটেনে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা সেই সভার আয়োজন করেছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেই সভাতেই ভাষণ দেন পদচ্যুত শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে তিনি আঙুল তুললেন বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে। হাসিনা এও দাবি করেছেন, তিনি কাউকে খুন করেননি। যাঁরা এখন খুন করছেন, তাঁদের বিচার এক দিন হবেই বলেই মন্তব্য করেন মুজিবুরকন্যা। প্রশ্ন উঠছে, ‘অজ্ঞাতবাস’ কাটিয়ে তবে কি ধীরে ধীরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন হাসিনা? ভার্চুয়াল বক্তৃতায় হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশকে গরিব দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ করে তুলেছিল আওয়ামি লিগ। আমার অপরাধ, আমি সাধারণ মানষের উন্নতির জন্য কাজ করেছি। একদিন গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ফ্যাসিবাদী ইউনুসের বিচার হবেই। এই অন্ধকার কেটে যাবে, নতুন সূর্য উদিত হবে বাংলাদেশে। জঙ্গি, দুষ্কৃতী, অপরাধীদের জেলমুক্ত করে এই সরকার বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তারাও আসলে অপরাধী। অন্যদিকে ৩০ হাজার মিথ্যে মামলা করা হয়েছে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিচার করেছি আমি, তাই আমার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র।” বিজয়ের মাসে ‘৭১-এর শহিদদের স্মরণ করেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী। আবেগ ভরা কণ্ঠে হাসিনা বলেন, “আজকে ঘরে ঘরে লুটপাট চলছে। দুষ্কৃতীদের শাস্তি হচ্ছে না। কার কাছে বিচার চাইতে যাবে মানুষ! এরা পুলিশকেও মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।” বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, অধিক মানুষের মৃত্যু চাননি বলেই তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন। বলেন, “ফ্যাসিবাদী, গণহত্যাকারী ইউনুস এবং তাঁর চ্যালা-চামুণ্ডাদের বিচার হবেই।” তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। অথচ এখন বন্যা, ঝড় গেল, কিন্তু তার পরে কেউ মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। আজ জনপ্রতিনিধিরা থাকলে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন।’’ গত অগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপর হেনস্থা, নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। হাসিনা দাবি করেছেন, সরকারি কর্মীদের এই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে। ‘মিথ্যা মামলা’ থেকে রেহাই দিতে হবে। কাজে ফেরাতে হবে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে সম্পর্কে এক ধরনের উত্তেজনা চলছে। একদিকে যেমন দুই দেশের সামাজিক মাধ্যমে পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগার চলছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উত্তেজনাকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই ভারতে বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনে হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন জারি। ফের ইসকনের মন্দিরে আগুন মৌলবাদীদের। ভয়ে সিঁটিয়ে হিন্দুরা। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ মহম্মদ ইউনুসের সরকার। ডেডলাইন বেঁধে সরকারকে ধর্মীয় সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার হুমকি বাংলাদেশি মৌলবাদীদের। নৈরাজ্যের বাংলাদেশে দিকে দিকে আক্রান্ত হিন্দুরা। বাংলাদেশ জুড়ে চূড়ান্ত অশান্তি। হিন্দু মহল্লায় আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
পারদ নামল অনেকটাই। কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বলা যায় চলতি শীতের মরশুমের আজ দ্বিতীয় শীতলতম দিন। এর আগে একবার ডিসেম্বরে ...
Read more
Discussion about this post