জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরল সেনা। চলতি বছর সেনা অভিযানে উপত্যকায় খতম হয়েছে ৭৫ জন সশস্ত্র জঙ্গি। যার মধ্যে ৬০ শতাংশই পাকিস্তানের নাগরিক। উপত্যকাকে অশান্ত করতে পাকিস্তান সক্রিয়তা যে কত ব্যাপক, তা এই পরিসংখ্যান থেকেই সহজে অনুমেয়। এ বছর মৃত ৭৫ জন জঙ্গির মধ্যে এলওসি ও আন্তর্জাতিক সীমা পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলাকালীন ১৭ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় সেনার সঙ্গে অভিযান চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। কাশ্মীরের ৯টি জেলায় জঙ্গি দমনে সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে সেনা। সবচেয়ে বেশি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বারামুল্লা জেলায়। এখানে ৯টি এনকাউন্টারে ১৪ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। সেনার তরফে দাবি করা হয়েছে, লাগাতার অভিযানে স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনগুলি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে কার্যত নির্মূল হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় সীমান্ত পেরিয়ে আসা বিদেশি জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত কিছুটা বেড়েছে। তাদেরও কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করছে সেনা। উপত্যকাকে অশান্ত করতে পাকিস্তান যে উঠেপড়ে লেগেছে তা এই রিপোর্টেই স্পষ্ট। চলতি বছর মৃত ৭৫ জঙ্গির মধ্যে ৬০ শতাংশই পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢুকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যেভাবে হোক কাশ্মীরে অশান্তি জিইয়ে রাখতে। যদিও কাশ্মীরে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র বানচাল করতে ‘অল আউট’ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। তারই সুফল মিলছে জম্মু ও কাশ্মীরে। এমনকি এবছর সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দেওয়ার সংখ্যাও অত্যন্ত কম উপত্যকায়। মোট ৭ জন যুবক সন্ত্রাসী দলে নাম লিখিয়েছন বলে খবর। পাশাপাশি, হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তাল। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে হিন্দু নির্যাতনের ইস্যুতে প্রতিবেশি দেশটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। তার ওপর বেড়েছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা। বিএসএফ সতর্ক রয়েছে। তবে বহু জায়গায় খোলা সীমান্ত ও ঢিলেঢালা নজরদারির সুযোগে ইতিমধ্যে কাঁটাতার টপকে ওপার বাংলা থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছেন অনেক বাংলাদেশি। পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে আনসারুল্লা বাংলা টিম সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ থেকে এবিটির দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে অসম পুলিশের এসটিএফ। আবার পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ক্যানিং থেকে এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃত কাশ্মীরের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-উল-মুজাহিদিনের সদস্য। এর জেরে বেড়েছে উদ্বেগ। রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ এপার বাংলায় কেউ কাজে লাগাতে পারবেন না। পুলিশ তৎপর রয়েছে। রাজীবের দাবি, কাশ্মীরের জঙ্গিকে বাংলার পুলিশই ধরিয়ে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘কাশ্মীরের জঙ্গিকে দু’দিন ধরে ট্র্যাক করেছি আমরা। ওর গতিবিধি নজরে রেখেছি। তার পর কাশ্মীরের পুলিশকে ডেকেছি। আমরা নিঃশব্দে আমাদের কাজ করছি।’ তাঁর সংযোজন, ‘জঙ্গিদমনে আমাদের রেকর্ড অতীতেও ভালো ছিল। এখনও ভালো। আগামী দিনেও আমরা সেই রেকর্ড বজায় রাখার চেষ্টা করব। আমরা রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ নিয়ে পরোক্ষে বিএসএফকে নিশানা করেছেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য, যার সঙ্গে তিনটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব বিএসএফের। সেখানে অনেক খামতি রয়েছে। কয়েক দিনে অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে এপার বাংলায় ঢুকেছেন, ঢুকছেনও। কিন্তু আমরা তৎপর আছি। অনুপ্রবেশকারীদের আমরা গ্রেপ্তার করছি।’ প্রসঙ্গত, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ভারত-বিরোধী জঙ্গিরা ঘাঁটি গাড়ছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের। গোয়েন্দাদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে সীমান্তের ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে নিজেদের ‘পাকা ঘাঁটি’ তৈরির কাজে তৎপর রয়েছে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ, আনসারুল্লা বাংলা টিমের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি। গোয়েন্দাদের মতে, জেএমবি-র পরিসর দখল করে বেড়ে উঠছে এবিটি। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এখন দুই শিবিরকেই মদত দেওয়া শুরু করেছে। এ নিয়ে অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরাকে সম্প্রতি কেন্দ্র সতর্ক করে দিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যেহেতু বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত সবচেয়ে দীর্ঘ, তাই এ রাজ্য নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, সীমান্তের কাছে জনভিত্তি বাড়িয়ে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ তৈরি করতে চাইছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। বাংলাদেশের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সীমান্ত এলাকায় সক্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েছে আইএসআই। সীমান্ত এলাকায় একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করছে তারা।
পারদ নামল অনেকটাই। কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বলা যায় চলতি শীতের মরশুমের আজ দ্বিতীয় শীতলতম দিন। এর আগে একবার ডিসেম্বরে ...
Read more
Discussion about this post