আফগানিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক এই প্রথম সরকারি ভাবে দেখা করেছিলেন তালিবানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মহম্মদ ইয়াকুবের সঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, ভারত সরকার এবং তালিবানের মধ্যে সম্পর্কের আরও প্রসার ঘটানো নিয়ে আলোচনা হয় দুই পক্ষের। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বুধবার ইয়াকুবের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশ মন্ত্রকের পাকিস্তান-আফগানিস্তান-ইরান বিভাগের যুগ্ম সচিব জেপি সিং। এই বৈঠকটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বলে উল্লেখ্য করছেন বিশ্লেষকরা। বৈঠক সম্পর্কে অবগত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রয়াত সর্বোচ্চ নেতা ওমরের ছেলে ইয়াকুব এর আগে কখনও ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলেননি। এদিকে ভারতের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই সব বৈঠক নিয়ে কোনও বক্তব্য পেশ করা হয়নি সরকারি ভাবে। তবে তালিবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে বলা হয়, জেপি সিংয়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন ইয়াকুব। দুই পক্ষের সম্পর্ক আরও কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয় সেই বৈঠকে। তালিবানের সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশেষ করে মানবাধিকার ক্ষেত্রে দুই পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও পোক্ত করতে চায়। উল্লেখ্য,গত বুধবার আগাম কোনও ঘোষণা ছাড়াই আফগান রাজধানী কাবুলে পা রাখেন জেপি সিং। এদিকে সফরকালে ইয়াকুবের পাশাপাশি তালিবানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেছেন জেপি সিং। ভারতীয় আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে হামিদ কারজাই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘ঐতিহাসিক ভাবে দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। এই আবহে বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে যতটা সম্ভব আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। আফগান মানুষের জন্যে ভারত যা করছে তা প্রশংসনীয়। তবে আফগান তরুণদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া উচিত। বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো উচিত। দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ আরও সহজ করা উচিত।’ যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে। দুপক্ষই সীমানায় দাঁড়িয়ে তাল ঠুকছে। আফগানিস্তানের মাটিতে ঢুকে জঙ্গি ডেরা নিকেশের নামে পাকিস্তানের বোমা বর্ষণের ঘটনায় যারপরনাই খেপে রয়েছে তালিবান কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছিল, কাবুল, কান্দাহার, হেরাট থেকে ১৫ হাজার তালিবান যোদ্ধা পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন খোয়ার দিকে এগিয়ে আসছে। সেই খবর পেয়ে পাকিস্তানও সাঁজোয়া গাড়িসহ সেনা মোতায়েন করছে সীমান্ত এলাকায়। জানা গিয়েছে, পেশোয়ার ও কোয়েট্টা থেকে সেনা ও বিমানবাহিনীকে সীমান্তে মোতায়েন করেছে পাকিস্তান। শুক্রবারই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক সরকারি অনুষ্ঠানে বলেছেন, পাক তালিবানকে আশকারা দিচ্ছে আফগানিস্তান। যা বরদাস্ত করা হবে না। বহুবার আফগান কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে মদত জোগানো বন্ধ করতে। পাকিস্তান কাবুলের সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব রেখে চলতে চায়। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে তা মেনে নেওয়া হবে না। সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের দিক থেকে বেশ কিছু সেনা ইতিমধ্যেই আফগান সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছে। আফগান তালিবান দলও মির আলি সীমান্তের কাছাকাছি রয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও দিক থেকেই গোলাগুলি বর্ষণের শব্দ শোনা যায়নি। আফগানিস্তানের তালিবানের হাতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র আছে। আমেরিকার সৈন্যের ফেলে যাওয়া প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র হাতে পেয়েছে তালিবান। যেমন- একে ৪৭, মর্টার, রকেট লঞ্চার। এছাড়াও ভৌগোলিকভাবেও পাহাড়ি এলাকা ও গিরিখাদ থাকায় যুদ্ধকৌশলেও অনেক এগিয়ে রয়েছে আফগানিস্তান।
পারদ নামল অনেকটাই। কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বলা যায় চলতি শীতের মরশুমের আজ দ্বিতীয় শীতলতম দিন। এর আগে একবার ডিসেম্বরে ...
Read more
Discussion about this post