১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোস্টে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সোমবারই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা ‘সীমিত’, তাঁর বক্তব্যের নির্যাস এমনই। পড়শি বাংলাদেশের দিকে সবসময় বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বড় অবদান ছিল ভারতীয় সেনার। বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে ভারতের অনেক বীর সন্তান আত্মত্যাগ করেছেন। ভারতীয় সেনার বীরত্বের কাছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হার স্বীকার করে পাকিস্তানের সেনা। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করে ভারত। সোমবার সেই বিজয় দিবসে বীর জওয়ানদের আত্মত্যাগকে স্যালুট জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজয় দিবস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর টুইটকে কটাক্ষ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এদিন বিজয় দিবসে এক্স হ্যান্ডলে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “আজ বিজয় দিবসে, ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী জওয়ানদের সাহস ও আত্মত্যাগকে আমরা সম্মান জানাই। তাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ ও অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে। এই দিনটি তাঁদের বীরত্ব ও অদম্য চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁদের আত্মত্যাগ প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের দেশের ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।” কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনার অবদানকে নস্যাৎ করে দিয়ে আসিফ জানান, মোদির এমন পোস্টের তীব্র বিরোধিতা করছেন তিনি। ফেসবুকে আসিফ লেখেন, ‘তীব্র প্রতিবাদ করছি। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ছিল বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। ভারত ছিল এই বিজয়ের মিত্র, এর বেশি কিছু নয়।’ উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাতের বক্তব্যেও ভারতকে তুচ্ছ করার এই সুরই ছিল। তাঁর দাবি, মুক্তিযুদ্ধ ছিল স্বাধীনতা চেয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংগ্রাম। সেই যুদ্ধের কৃতিত্ব চেয়ে ভারত ‘হুমকি’ দিচ্ছে বাংলাদেশকে। যদিও তাঁরা যখন সেই মন্তব্য করেছেন, তার কিছুক্ষণ আগেই বিজয় দিবস নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস যে ভাষণ দেন, তাতে সৌজন্যতার খাতিরে একবারও ভারতের নাম নেয়নি। এমনকী বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের নামও নেননি ইউনুস। বেশিরভাগ সময়টা নিজের সরকারের ঢাক পেটাতে এবং শেখ হাসিনার মুণ্ডপাত করতে খরচ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। যদিও ভারতের হাত ধরেই স্বাধীনতা এসেছিল। কিন্তু বিজয় দিবসে ভারতের জন্য একটাও শব্দ খরচ করলেন না বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সোমবার ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানের ৯৩,০০০ ফৌজির আত্মসমর্পণের ঘটনার ৫৩ বছর পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দেন, তাতে সৌজন্যের খাতিরেও ভারতের নামটুকু নেননি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। প্রায় ৩০ মিনিটের ভাষণের অধিকাংশ সময়টাই ‘পৃথিবীর ঘৃণ্যতম স্বৈরাচারী শাসক’ শেখ হাসিনাকে আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি ভারতের প্রতি কোনও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলেও ভারতীয় জওয়ানদের স্যালুট জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই পরিস্থিতিতে নজরুলদের সেই ‘গরম-গরম’ কথার পরে প্রশ্ন উঠছে যে তাঁরা কি ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন? কারণ ২০২৩ সালেও ‘বিজয় দিবস’-র শুভেচ্ছায় বাংলাদেশের নাম করেননি মোদী। ২০২২ সালেও সেটা করেননি। ২০২১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছরের পূর্তিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা’-দের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করেছিলেন। সেইসঙ্গে যে পাকিস্তানকে পর্যদুস্ত করেছিল ভারত, শক্তির আস্ফালন করতে সেই দেশেরও নাম নেননি মোদী।
গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের নতুন রসায়ন খুবই মধুর হতে শুরু করেছে। প্রায় ৫০...
Read more
Discussion about this post