আপাতত স্বস্তি। এখনই ভাঙা হচ্ছে না মন্দারমণির ১৪৪টি বেআইনি রিসর্ট। মন্দারমণিতে কোনও বুলডোজার চলবে না৷ এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নবান্নকে না জানিয়ে কোনও হোটেল এবং রিসর্ট ভাঙতে পারবে না জেলা প্রশাসন৷ হোটেল ভাঙা নিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কার্যত, স্তম্ভিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েক বছরে পূর্ব মেদিনীপুরের এই সমুদ্র নগরীতে পর্যটকদের আনাগোনা ভীষণভাবে বেড়ে যাওয়ার এখানে আরও বেড়েছে হোটেল ও দোকানের সংখ্যাও। তবে অভিযোগ, মন্দারমণিতে গত কয়েক বছরে গড়ে ওঠা বেশ কিছু হোটেল, রিসর্ট, দোকান বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এবার মন্দারমণিতে ১৪০টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই নির্দেশেই এবার মাথায় হাত মন্দারমণির পর্যটন ব্যবসায়ীদের। বহু মানুষের রুটি-রুজিও প্রশ্নের মুখে। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরের কোনও আধিকারিক, এমনকী, মুখ্যসচিবও জানতেন না। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মমতা। কারোর সঙ্গে আলোচনা না করে কীভাবে এহেন সিদ্ধান্ত? তা নিয়েও প্রশাসনিক প্রধান কার্যত প্রশ্ন তোলেন বলে খবর। এ নিয়ে হোটেল মালিকদের সঙ্গেই দ্রুতই বৈঠকে বসবেন মুখ্যসচিব। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বুলডোজার কোনও সমাধানের পথ নয়। কোনওরকম বুলডোজার চলবে না।”
প্রসঙ্গত, কোস্টাল রেগুলেশন জোন’কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একের পর এক হোটেল তৈরি করা হয়। এমনকি নির্দিষ্ট উপকূলবিধি না মেনেই সেগুলি তৈরি করা হয়েছে বলেও খবর। গত ১ নভেম্বর কোস্টাল রেগুলেটেড জোন ম্যানেজমেন্ট অথরিটির জেলা কমিটির তরফে মন্দারমণি এবং সংলগ্ন আরও চারটি মৌজায় ১৪০টি হোটেল, লজ, রিসর্ট এবং হোম স্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে ওই সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি হোটেল নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন। আরও প্রায় ৩০ টি হোটেলকে চিহ্নিত করে নোটিস জারি করার জন্য হিয়ারিংয়ে ডাকা হয়েছে। এই ঘটনাতেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন হোটেল মালিকরা। এত মানুষের রুজি রোজগার কোথায় যাবে? রুজি রোজগারের কী হবে? কোটি কোটি টাকার হোটেল! সেগুলোর-ই বা কী হবে? চিন্তায় হোটেল ব্যবসায়ীরা। এই নিয়েই হাইকোর্টর দ্বারস্থ হয়েছেন মন্দারমনি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের বক্তব্য, শুধু মন্দারমনি নয় দিঘা, পুরী,গোয়ার মতো প্রভৃতি জায়গাতেও সি-বিচের কাছেই সব হোটেল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাহলে মন্দারমনির জন্য আলাদা নিয়ম কেন? এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন?
Discussion about this post